কলকাতা: প্রায় ১০টা কামানের গোলার শব্দের সমান শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সাবিনা খাতুন। কিছুদিন আগে হয়ে গেছে ভূমিকম্প।
এক দিন কেটে যাওয়ার পরেও আতঙ্ক কাটেনি। চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি থেকে সামান্য দূরে কলকাতার বড়বাজার এলাকার বাড়িগুলি বেশ পুরাণ। তাই অনেক পরিবারই বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতেই বাড়ি ছেড়ে নিকটবর্তী আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
যারা আছেন তারা ত্রস্ত। একদিকে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার স্মৃতি। অন্যদিকে, এত বড় উড়ালসেতু ভেঙে যাওয়ায় বাড়ির ক্ষতির আশঙ্ক। এর ফলে, তাদের চিন্তা বেড়েছে।
এলাকার বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ। বাধ্য হয়ে দূর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে হচ্ছে। এর ফলেও অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। নির্মাণ সংস্থার আই ভি আর সি এল এবং দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের চূড়ান্ত গাছাড়া ভাবের জন্য এই ক্ষতি বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ।
তাদের দাবি, কাঁচামাল খারাপ মানের ছিল। তারা এর তদন্ত দাবি করছেন। ঘটনাস্থলে হাজির প্রকৌশলীরাও নাশকতার উদ্দেশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাদের মতে, এটা নির্মাণের ত্রুটি। কোনো নাশকতা নয়।
আই ভি আর সি এল–এর কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের নাশকতা বা ভূকম্পনের তত্ত্বকে একবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন এলাকার মানুষ। কোনো ধরনের বিস্ফোরণ বা নাশকতার ঘটনা নয় বলেই তাদের দাবি। একই দাবি পুলিশের।
বিরাট শব্দে ভেঙে পরার ফলে কিছু বাড়ির কাঁচ ভাঙার আশঙ্কা থাকলেও বেশিরভাগ বাড়ির কাঁচগুলি অক্ষত রয়েছে। কোনো ধরনের নাশকতা তত্ত্বকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে গাড়িগুলিতে আগুন লাগে। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এই একই কথা বলেছেন, উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। ইতোমধ্যেই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। প্রাথমিকভাবে তারাও নির্মাণের কাজের ত্রুটিকেই দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন। তবে, গোটা এলাকার বিভিন্ন বহুতলে প্রবেশ করে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে বাড়িগুলিতে বড় কোট ফাটল বা ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১ , ২০১৬
ভিএস/পিসি