কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলা আমের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার আম শুধু যে পশ্চিমবঙ্গ আর ভারতবাসীর চাহিদা মেটায় তা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও হয়।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এই দুই জেলা থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে দেড়শ’ প্রজাতির আম। ক’বছর আগেও মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলার বাগানগুলোতে প্রায় ২০০ প্রজাতির আম পাওয়া যেত।
কিন্তু জেলার চাষিরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬০ প্রজাতির আম। এর মধ্যে ৫২টি প্রজাতি বেশি পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। বাকি ৮টি প্রজাতি খুব কম বাগানেই পাওয়া যায়।
সিরাজদৌল্লার মুর্শিদাবাদের বাগানে এক সময় পাওয়া যেত ১৪৭ রকমের আম। কিন্তু তার বেশির ভাগ প্রজাতি বর্তমানে বিলুপ্ত।
দুধকুমার, মধুগুলগুলি, সুরিখাস, কোহিতুর, আলাপাতি, বিমলি, বৃন্দাবন, আরাজানমার মতো আম টিকে রয়েছে সামান্য কিছু এলাকায়। চাষিরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই হারিয়ে যাচ্ছে কোনো না কোনো জাতের আম।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, গাছের বুড়িয়ে যাওয়া আর উচ্চফলনশীল আম চাষের প্রবণতাই ওসব প্রজাতির আমের হারিয়ে যাওয়ার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
চাষিরা এখন আম্রপালি, চ্যাটার্জি, মল্লিকা, হিমসাগর, ল্যাংড়ার মতো আম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কারণ এসবের ফলন অনেক বেশি। আর এই বেশি ফলনের ধাক্কায় প্রায় হারিয়ে গেছে নবাবভোগ, মধুগুলগুলি এবং আলাপাতি –এর মতো আম। লখনৌয়ের ম্যাঙ্গো রিসার্চ স্টেশন-এর মতে, ভারতের সেরা আম কোহিতুর। কিন্তু খোসা কোহিতুর –এর চেয়ে মোটা হওয়ায় রপ্তানির বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে আলফানসো।
আশার কথা এই যে, বিলুপ্তপ্রায় আমের প্রজাতিগুলোকে বাঁচাতে একসঙ্গে কাজ করছেন চাষি ও সরকারি কর্মকর্তারা। সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের দাবি, বেশ কিছু হারিয়ে যাওয়া প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। তার কিছু কিছুতে ফলন শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৬
ভিএস/জেডএম