ঢাকা: আসছে ১৯ মে পশ্চিমবঙ্গে বিধান সভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ওইদিনই ভাগ্য নির্ধারিত হবে কে হবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী?
নির্বাচনের ছয় দফা ভোটগ্রহণ শেষে গোটা পশ্চিমবঙ্গে জুড়ে এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
অনেকে বলছেন, না। বর্তমান আমলে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যাওয়ায় তার এবার মসনদ পাওয়া হচ্ছে না। নতুন কেউ বসতে যাচ্ছেন ‘নবান্নে’।
৪ এপ্রিল প্রথম দফা ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিধানসভা নির্বাচন। এরপর ১১ এপ্রিল, ১৭ এপ্রিল, ২১ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল ভোটগ্রহণ হয়। তবে শেষ দফা ভোট হয় ৫ মে।
নির্বাচনে কারচুপিসহ হামলা-সংঘর্ষে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সরকারি দলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মেরও অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
২০১১ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়তি ছিলো তার সাদা-সিদে বেশভূষা ও সরল জীবনযাপন।
তবে সরকার গঠনের পর সারদা কেলেঙ্কারিসহ বেশ কিছু ঘটনা মমতা ও তার দলের ভাবমূর্তিতে বেশ ধস নামিয়েছে। এছাড়া নারদকাণ্ড ভিডিওতে তৃণমূলের ১১ মন্ত্রী, সংসদ সদস্যকে ঘুষ নিতেও দেখা যায়। যা পুরো রাজ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
নির্বাচনের আগে এমন ইস্যু নিয়ে প্রায়ই বিরোধীদের প্রচার-প্রচারণায় মুখোমুখি হতে হয়েছে মমতাকে। মমতা যদিও নিজে দুর্নীতির ‘ঊর্ধ্বে’ আছেন বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু তার মন্ত্রণালয়ের ‘দুর্নীতিবাজ’ মন্ত্রীদের পক্ষে কথা বলায় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে সরকার গঠনের ম্যাজিক সংখ্যা ১৪৮। ২০১১ সালের নির্বাচনে মমতার দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হয়। ১৮৪ আসন দখল করে মমতা মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন।
বামফ্রন্টের টানা ৩৪ বছরের শাসনামলে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের নেতাদের দুর্নীতি ও বাড়াবাড়িতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।
গত নির্বাচনে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামদলগুলো ৬০ আসন পায়। কংগ্রেস পায় ৪২টি আসন। আর বর্তমানে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি পায় মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সচেতনদের একটি পক্ষ বলছেন, মমতাই ফের ক্ষমতায় ফিরবেন। তবে আগের মতো সংখাগরিষ্ঠতা নিয়ে নয়। আসন সংখ্যা কমবে। এজন্য দায়ী হবেন তৃণমূলের নেতারাই। কারণ প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণের পর তাদের লাগামহীন বক্তব্য দিয়ে মানুষকে ‘নিরাশ’ করেছেন।
এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও দুর্নীতির আঙ্গুল তুলেছেন মমতা সরকারের বিরুদ্ধে। তাই এখন আর কেউ জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না ‘দিদিই’ ফের গদিতে আসছেন। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে বাম কিংবা জোটের দলগুলো।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার রয়েছেন ৬ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার ১০১। নির্বাচনে মমতার তৃণমূলের মতো নরেন্দ্র মোদির বিজেপিও এককভাবে নির্বাচনে লড়ছে। আর জোটবদ্ধভাবে অংশ নিয়েছে জাতীয় কংগ্রেস ও সিপিআই (এম)।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৬
এসএস/এমএ