কলকাতা থেকে: কথায় আছে- যে ছোটে ভাগ্যও তার সঙ্গে ছোটে। আর যে ঘুমিয়ে থাকে ভাগ্যও তার সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকে।
২০১১ সালে পরিবর্তন দিয়ে যে সরকারের পথচলা শুরু হয়েছিল, তার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হল শুক্রবার (২৭ মে)৷
প্রত্যাবর্তনের সরকারের প্রকাশ্য শপথ গ্রহণ হল রেড রোডে। এদিন থেকেই পশ্চিমবঙ্গ মানুষের শুরু হল আরও বড় প্রত্যাশা পূরণের প্রতীক্ষা৷ যা সফল করতে এখন থেকেই প্রস্তুত নতুন সরকার৷ আগামী পাঁচ বছরের রোডম্যাপ নিয়ে তৈরি বিভিন্ন দফতরের সচিবরা৷ দুপুরে শপথের পরই মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে নবান্নে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী৷
মমতা নবান্নে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের বলেন, আমি একজন এল-আই-পি। লেস ইম্পর্টেন্ট পার্সন৷ আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব৷ এসময় সহযোগিতা ও শুভকামনার জন্য বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানান তিনি৷
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনটাকে সফল করে তোলার জন্য মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ৷ এটি মানুষের জয়। এটি গণতন্ত্রের জয়৷ আমরা এই দিনটি মা-মাটি-মানুষকে উৎসর্গ করলাম৷
বিকেলে বসে তার দ্বিতীয় সরকারের প্রথম ক্যাবিনেট৷ সেখানে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী-সহ ৪২ মন্ত্রী৷ তাদের মধ্যে নতুন মুখ ১৮৷ উত্তরবঙ্গ থেকে রয়েছেন চারজন৷ কলকাতা থেকে আটজন৷ শুধুমাত্র মালদহ ছাড়া প্রতিটি জেলা থেকেই মন্ত্রিসভার প্রতিনিধি আছেন৷ তাদের সবাইকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন দলনেত্রী তথা সরকারের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
নতুনদের তিনি বলেন, তাদের যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন তার সদ্ব্যবহার করেন৷ পুরনোদের পরামর্শ, বাড়তি দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে উন্নয়নে কোথাও কোনও খামতি যেন না থাকে তা দেখতে৷
ভোটে নামা বিরোধীদের প্রায় ধুয়ে-মুছে দিয়েছেন মমতা৷ আশা পূরণে শপথ গ্রহণের দিন থেকেই অতি সক্রিয় হতে চায় সরকার৷ ক্যাবিনেট বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, ঘরে বসে সরকার পরিচালনা তিনি করেননি৷ প্রশাসনকে পৌঁছে দিয়েছেন জনতার দোরগোড়ায়৷ জেলায় জেলায় গিয়ে বৈঠক করে মানুষের মন বুঝে একের পর এক প্রকল্প চালু করে তাদের হৃদয় জয় করেছেন৷ মন্ত্রীদেরও সেই পথেই হাঁটতে হবে৷ এবং পুরস্কার-তিরষ্কার নীতির পক্ষে যে তিনি, তাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন৷
শুক্রবার কাট ফাটা রোদে রেড রোডে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নেওয়ার মুহূর্তে যে করতালি ও উচ্ছ্বাস দেখা গেল তা যে কোনও বড় ম্যাচে ভরা গ্যালারির উন্মাদনাকেও হার মানায়৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী৷ চারটি গ্রুপ করে মন্ত্রীরা শপথ নিয়েছেন৷ আগেই তাকে দলীয় বৈঠকে পরিষদীয় নেত্রী নির্বাচিত করা হয়৷
অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব-সহ প্রায় প্রতিটি দফতরের সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতা পুলিশ কমিশনার-সহ পদস্থ কর্তারা ছিলেন৷
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৬
এসএস/আরএ