কলকাতা: ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে বেশ কিছু নতুন সমীকরণের জন্ম দিয়েছে। একদিকে যেমন এ ফলাফল দিল্লির রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একেবারে সামনের সারিতে নিয়ে আসছে।
সমীকরণের শুরুর আলোচনায়ই আসবে কমিউনিস্ট পার্টি-মার্ক্সিস্ট (সিপিএম)। এবারের নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে বামদের কেবল ক্ষমতা থেকেই দূরে রাখেনি, ২০১১ সালে নির্বাচনে হেরেও যে বিরোধীদলের মর্যাদা বামদের ছিল, তাদের সেই মর্যাদাও কেড়ে নিয়েছে।
আসন সংখ্যার বিচারে জাতীয় কংগ্রেস হয়তো পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলের আসনে বসছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ও পরে রাজ্যের রাজনীতির ময়দানে বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসার প্রবল চেষ্টা চোখে পড়ছে বিজেপির।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য অনেক বার্তার ইঙ্গিতবাহী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পরে কলকাতা প্রেসক্লাবে অরুণ জেটলি বলেন, বেশির ভাগ আসনে বামদের ভোট ব্যাংকে ভাগ বসিয়েছে বিজেপি।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বিজেপির সামনে পশ্চিমবঙ্গে ঐতিহাসিক সুযোগ।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, যতোদিন পর্যন্ত বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় না আসছে, ততোদিন সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিজেপি। এ দুই মন্তব্য ঠিক পরিষ্কার হয়, পশ্চিমবঙ্গে মাঠে-ময়দানে নিজেদের বিরোধী শক্তি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে।
এ চেষ্টা যে শুরু হয়ে গেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়ও। তিনি প্রথম থেকেই কড়া ভাষায় আক্রমণ শুরু করেছেন নতুন সরকারকে। তাছাড়া, মাত্র তিনটি আসন পেলেও বিজেপি যে বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় শাসকবিরোধী লড়াইয়ে বিজেপির নাম জড়িয়ে যাওয়াও।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির লোকসভা ভোটের হিসাবের তুলনায় বিধানসভায় কিছুটা ভোট কমলেও গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের ভোট বেশ আশাবাদী করে তুলছে তাদের।
এ বিষয়গুলোকে সামনে রেখে অনেকেই মনে করছেন, একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লির রাজনীতিতে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, ঠিক তেমনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী হিসেবে বিজেপি সামনে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দুই সম্ভাবনার সফলতার বার্তা লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের গর্ভে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৬ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৬
ভি.এস/আরবি/এইচএ/