আগরতলা: এক সময় যাদের হাতে একে-৪৭ রাইফেলসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রের ঝলকানি ছিলো, বন্দুকে ট্রিগারে আঙ্গুল চেপে বৃষ্টির মতো গুলি ঝড়িয়ে কেড়ে নিতো সাধারণ মানুষের প্রাণ।
এ মানুষগুলো এখন সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসে অন্যসব মানুষের মতো বাঁচতে চায়, সামিল হতে চায় সমাজ ও দেশের উন্নয়নে।
পরশুরাম ত্রিপুরা, প্রাণেশ দেববর্মা, হায়না লাল হালাম-এঁরা সবাই ভুল প্ররোচণায় প্রভাবিত হয়ে বন্দুক হাতে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো- ত্রিপুরাকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন দেশ গঠন করা।
কিন্তু দীর্ঘদিন জঙ্গলের গোপন শিবিরে কাটিয়ে বুঝতে পারেন তারা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছেন। এদিকে ভারত সরকার ও ত্রিপুরা সরকার বিভিন্ন সময় রাজ্যের জঙ্গিদের আহ্বান জানিয়ে আসছে এ ভুল পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য।
সরকারের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন সময় শিবির ছেড়ে জঙ্গি সদস্যরা আত্মসমর্পণ করেছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা জঙ্গিদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের নবম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে রাজ্যের দক্ষিণ জেলার লাচিত ক্যাম্পে। শুক্রবার (১০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে এ প্রশিক্ষণ। চলবে টানা ৬ মাস।
প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি মোটর ড্রাইভিং ও মেরামত, টেইলারিং, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মোবাইল মেরামতের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পাঁচ নারীসহ মোট ৩১ আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিকে এ প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের পছন্দের বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা।
প্রশিক্ষণ শেষে তাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার জন্য দেওয়া হবে ঋণও। নতুন জীবনের পথ পেয়ে খুশি তারা।
উগ্রবাদী সংগঠন পরশুরাম ত্রিপুরা বাংলানিউজকে জানান, ভুল ভাবনা থেকেই এ পথ অনুসরণ, স্বাধীন এবং সুন্দরভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্যই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি।
‘এখনও যারা জঙ্গলে রয়েছে তারাও একদিন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
ওএইচ/ এমএ