কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে বিপুল ভোটে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ত্রিপুরায় নজর দিয়েছেন, সে সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল রাজ্য কংগ্রেস নিজেদের গুছিয়ে নেওয়া দূরে থাক, ক্রমশ নানা সমস্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
সমস্যার শুরু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে।
এদিকে, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে দুই দলেরই সমস্যা বেশ কিছুটা বেড়েছে। সমস্যা এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের ভাঙনের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন অনেকেই।
দিল্লিতে রাহুল গান্ধী বামদের সঙ্গে জোট করার বিষয়ে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের মতামত নেন। তবে সে সময় এক কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সামনেই সরাসরি জোটের বিরোধিতা করেন।
তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের সামনে তার মত টিকতে পারেনি। সমস্যা প্রথম প্রকাশ্যে আসে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ‘পাবলিক অ্যাকাউন্স কমিটি’-এর চেয়ারম্যানের পদে কংগ্রেস নেতা মানস ভূঁইয়ার নাম ঘোষণার পর।
বাম-কংগ্রেস জোটের সুবাদে ওই পদটি বামদের দেবার কথা ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু এই পদ থেকে কংগ্রেস নেতা মানস ভূঁইয়া সরতে না চাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ব্যবধান বাড়ে কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি তথা বিধান সভার সদস্য অধীর চৌধুরী এবং মানস ভূঁইয়ার।
একই সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং মানস ভূঁইয়ার মধ্যে।
ইতিমধ্যে মানস ভূঁইয়ার নামে একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। র ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মানস ভূঁইয়ার গোপন আঁতাত হয়েছে বলে ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তী সময় রাহুল গান্ধী সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেও এই সমস্যার সমাধান করা যায়নি। বর্তমানে
কংগ্রেসের একদল নেতা প্রকাশ্যেই সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। আরেক দল মানস ভূঁইয়াকে সরাসরি ‘খলনায়ক’ বানিয়েছেন। এতে করে কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। লোকসভার সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দল ছেড়েছেন ‘অধীর গড়’ বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা পৌরসভার চেয়ারম্যান সহ সাত কাউন্সিলর।
সবকিছু মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস কঠিন সময় পার করছে। তাই বিভিন্ন জেলায় দল ভাঙার যে হিড়িক পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতৃত্বের মধ্যে সেই ধরনের ভাঙন আসবে না কথা জোর দিয়ে বলছেন না কংগ্রেস নেতাকর্মীরাও।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
ভিএস/এসআর