কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস এবং বাম নেতারা বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বাম–কংগ্রেস জোট এক নতুন দিশা নিয়ে আসবে। ভোটের ফলাফলে অন্তত সেটি দেখা যায়নি।
ভোট পরবর্তী সময়েও দুই দলের অভ্যন্তরে জোটের জট নিয়ে বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে নেতারা।
কংগ্রেসে মানস ভূঁইয়া আর অধীর চৌধুরীর মতপার্থক্য সামলাতে মাঠে নামতে হয়েছে জাতীয় কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে। পাশাপাশি সিপিএমে ঘোষিত পার্টি লাইন না মেনে ভোটের পরেও ‘জোট’ ঐক্য বজায় থাকায় জেলা নেতাদের মধ্যে দল ছাড়ার খবর আসছে।
এ সমস্যা যে বড় আকার নিতে চলেছে তার ইঙ্গিত ছিল পলিটব্যুরোর বৈঠকেই। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘জোট’ করার প্রতিবাদ জানিয়ে দল ছাড়েন দক্ষিণ ভারতের সিপিএম নেত্রী জগমতি সাঙ্গোয়ান। তার পথ ধরে কলকাতার উপকণ্ঠে নিউ ব্যারাকপুরের সিপিএম নেতা অনির্বাণ তলাপাত্রও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা সম্পাদক বিধায়ক ড. সুজন চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়ে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, তলাপাত্রের মতো অনেকেই ভোট পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের কাছাকাছি থাকার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রথম সারির বামনেতা দলের সর্বোচ্চ স্তরের নীতি অনুযায়ী বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সম দূরত্ব বজায় রাখার যে কথা বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে সেই নীতি মানা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, দলের প্রথম সারির অন্তত আরও পাঁচজন তরুণ নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে চিঠি দিয়ে একই কারণে দল ছাড়ার কথা বলেছেন। এ ঘটনা সিপিএম প্রকাশ্যে না আনলেও জানা গেছে, রাজ্য সম্পাদক ওই পাঁচজন দলীয় নেতাকে দলের মধ্যে গোষ্ঠী রাজনীতি করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
দল ছাড়ার কোনো চিঠি তার হাতে এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা সম্পাদক বিধায়ক ড. সুজন চক্রবর্তী। তবে পরোক্ষভাবে মতপার্থক্যের বিষয়টি মেনে নিয়েছেন তিনি। তার আশা, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত রাজ্য কমিটি না মানলে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার বিষয়টি ভেঙ্গে যাবে। যেটি একটি বামপন্থি দলের সংগঠনের মূল ভিত্তি। সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হয়ে এ প্রসঙ্গে বিমান বসু বলেন, কংগ্রেস শরিক নয়। নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হয়েছিল। সে বাধা উৎরাতে একসঙ্গে সবাই লড়াই করেছেন। তাই বলে দু’টি বিষয় এক হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৬
ভিএস/এএসআর