কলকাতা: শ্রাবণের প্রায় শেষ, কলকাতার রাস্তায় জমে থাকা জল মনে করিয়ে দিচ্ছে ঘোর বর্ষার কথা। মাঝে এখনও প্রায় দুটি মাস,তবে তার আগেই আশ্বিনের আবাহনী শুরু হয়ে গেছে কলকাতায়।
শারদ উৎসবের প্রথম শুরু করার জন্য তারকাদের বুকিং সব কিছুকেই নিখুঁত করে মণ্ডপ বানানোর ঠিক আগে খুঁটি পূজার ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্লাবগুলোতে। অনেকেই জানেন আর যারা জানেন না তাদের জন্য বলা দরকার যে মণ্ডপ নির্মাণের আগে যে পূজা করা হয় তাকেই খুঁটি পূজা বলা হয়।
ক্লাব কর্তারা বৃষ্টির জন্য গত দুইদিন পিছিয়ে দিয়েছিল খুঁটি পূজা। বৃষ্টি কমতেই উদ্যোক্তারা ফোন করে মিডিয়া অফিসগুলোকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তাদের এ সূচি। তবে পাড়ার বৃদ্ধরা কিছুটা অবাক! তাদের অনেকেই একসময় বারোয়ারি দুর্গাপূজার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে খুঁটি পূজা নিয়ে কোনো হইচই হতো না।
কলকাতার বিখ্যাত পূজাগুলোর প্রায় সকলেই এখন আলাদা করে খুঁটি পূজা করেন। দক্ষিণ কলকাতার ‘স্টার’ পূজা অজেয় সংহতি, বরিশা ক্লাব, একডালিয়া এভার গ্রিন থেকে শুরুর করে উত্তর কলকাতার লেবুতলা, কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত প্রায় সব জায়গাতেই ধুমধাম করে করা হচ্ছে খুঁটি পূজা। সল্টলেকের এমনই একটি খুঁটি পূজার অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল।
বিভিন্ন পূজা কমিটির খুঁটি পূজায় ঘুরে দেখা গেল কোথাও হাজির রাজনৈতিক নেতারা, কোথাও অভিনেতা –অভিনেত্রীরা আবার কোথাও খেলোয়াড়রা হাজির এই খুঁটি পূজায়। প্রতিমা , প্যান্ডেল, লোক সমাগম নিয়ে প্রতিযোগিতা ছিলই, এখন খুঁটি পূজা নিয়েও শুরুর হয়েছে প্রতিযোগিতা। কোন ক্লাব কোন তারকাকে আনতে পারেন কিংবা কত বড় নেতা ক্লাবের খুঁটি পূজাতে থাকতে পারেন সেটাই প্রতিযোগিতার বিষয়।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন এই সময়ে তিনি অন্তত ৭০টি খুঁটি পূজার আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন। আরও বেশ কিছু বাকি আছে। কিন্তু খুঁটি পূজার পৌরাণিক ব্যাখ্যা কি ? এই প্রশ্নের উত্তরে ভাষাতত্ত্ববিদ তথা পুরাণ বিশারদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুরি জানিয়েছেন, পুরাণ বা শাস্ত্রে খুঁটি পূজার কোন উল্লেখ নেই। তিনি আরো বলেছেন খুঁটি পূজাকে এখন পূজার ভূমিকা হিসেবে ধরা হচ্ছে যার কোন ভিত্তি নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৬
এসএস/বিএস