কলকাতা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদত বাষির্কী এবং ভারতের ৭০তম স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের সন্ধ্যায় কলকাতায় মঞ্চস্থ হলো, অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতার লড়াই, সমান অধিকারের লড়াই নিয়ে ঐতিহাসিক নাটক স্পার্টাকাস।
রোমের নায়ক স্পার্টাকাসের মৃত্যুর পর, রোম সাম্রাজ্য তথা গোটা বিশ্বে তার অবশ্যম্ভাবী প্রভাব এ নাটকের প্রধান উপজীব্য।
ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের সূত্র ধরেই উঠে এসেছে স্পার্টাকাসদের সংগ্রামের ইতিহাস। নাট্যকার, পরিচালক মলয় রায় এবং রোকেয়া রায় হাওয়ার্ড ফার্স্টের উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ নাটকটি লিখেছেন।
নাটকের নাম 'স্পার্টাকাস'। তবে নাটকের ব্যাপ্তি উপন্যাসকে ছাড়িয়ে গেছে।
আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ঢাকাতে এ নাটকের প্রদর্শনী হবে বলে নাট্যদল 'পূর্বরঙ্গ'-এর তরফে জানান হয়েছে। আবার একই বিষয়ের নাটক নিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্নদল নামে নাট্যদল আসছে নভেম্বরে কলকাতায়।
নাটকের শুরুতেই হাজার হাজার কঙ্কাল থেকে অশরীরীর মতো নেমে আসে মানুষ। তাদের নিয়েই পুরো নাটকের বিস্তার। যুদ্ধে স্পার্টাকাসের মৃত্যুর পর তার কয়েক হাজার সঙ্গীকে রোমের রাস্তায় মেরে টাঙিয়ে রাখা হয়েছিল, সেই ঐতিহাসিক সত্য থেকেই নাটকের শুরু।
৩০ জন অভিনেতাকে নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মহামূল্যবান এ দলিল।
নাটকে রোকেয়া রায়, রণিত মোদকের মতো সুপরিচিত অভিনেতার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ কুশলী অভিনেতাও। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এক ঝাঁক বিভিন্ন বয়সের নবীন অভিনেতা।
নাটকের মূল উপজীব্য মানুষের স্বাধীনতার লড়াই। তাই ভারেনিয়ার মধ্যে দিয়ে নতুন করে জীবন ফিরে পায় স্পার্টাকাস। ভারেনিয়ার চোখ দিয়ে স্পার্টাকাস নতুন করে পৃথিবীটাকে দেখতে পায়। যে লড়ায়ের সঙ্গে কখনও মিশে যায় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, কখন ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। যেখানে মানুষের মুক্তি একমাত্র উপজীব্য।
নাটক দেখতে দেখতে দর্শক কখন যেন রোম সাম্রাজ্যে ঢুকে পড়েন। অভিনয়েও প্রথমে আবারও সেই ভারেনিয়ার চরিত্রে রোকেয়ার কথাই বলতে হয়। স্পার্টাকাস রণিত মোদকও অনবদ্য। নজর কেড়েছেন বাটিয়াটাস প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় ও ড্রাবা রাজীব রায়। এক ঝাঁক নতুন তরুণ শিল্পীদের সম্মিলিত অভিনয়, যা নাটকটিতে আলাদা মাত্রা জুগিয়েছে। রোকেয়া রায় মূলত আবৃত্তি শিল্পী। কিন্তু মঞ্চাভিনয় তিনি তার দক্ষতা ফুটিয়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশের দর্শদের সামনে তাদের অভিনয় তুলে ধরার জন্য মুখিয়ে আছে এই নবীন, কিন্তু যথেষ্ট কুশলী এ নাট্য গোষ্ঠী। তাদের মতে ‘স্পার্টাকাস আজও প্রাসঙ্গিক। আর এ প্রাসঙ্গিকতা দেশ কালের সীমারেখা অতিক্রম করে মেহনতি মানুষের মুক্তির কথা বলে।
অন্যদিকে ঢাকার শিল্পীদের স্পার্টাকাস নিয়ে ভাবনা এবং অভিনয় দেখতে মুখিয়ে আছে কলকাতার দর্শকরা। এ ভাবেই স্পার্টাকাসের লড়াই এক দেশ থেকে আরেক দেশের মানুষের ভিড়ে মিশে যাচ্ছে সমস্ত সীমানা অতিক্রম করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৬
ভি.এস/এসএইচ