পুকুরে ইলিশ চাষের পরীক্ষার কত দূর অগ্রগতি হয়েছে, তার হাল হকিকত নিয়ে চন্দ্রনাথ বাবু জানান, ‘ডায়মন্ড হারবারের দুটি পুকুর ও রাজারহাটের একটি পুকুরে ইলিশ চাষ করা হচ্ছে৷ মাছ বড় হচ্ছে৷ তিন-চার মাস হয়েছে এখনও পর্যন্ত মোটামুটি একশো গ্রাম ওজন হয়েছে মাছগুলোর। ’
দেওয়া হচ্ছে পছন্দের খাবার।
আপাতত পাঁচ-ছয়শ গ্রাম ওজনের দিকে নিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য। কেনই বা এই নজরদারি হবে না, পানির রূপালি শস্য বলে কথা!
তাই দুই ২৪ পরগনার তিনটি জলাশয়ে চাষ হওয়া ইলিশকে এখন নয়নের মণির মতো রক্ষা করছে মৎস্য দফতর। তিন-চার মাস আগেই ডায়মন্ড হারবারের দু’টি জলাশয় এবং রাজারহাটের একটি জলাশয়ে পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষ শুরু করেছে মৎস্য দফতর। নদীর মাছ আদৌ বদ্ধ জলাশয়ে বাঁচবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন দফতরের কর্মকর্তারা।
কারণ, গত এক দশকে কেন্দ্রীয় সংস্থার উদ্যোগে আগেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পুকুরে ইলিশ চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু সেই পরীক্ষা সফল হয়নি।
সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও দক্ষিণ ২৪পরগনার গোদাখালীতে বেসরকারি উদ্যোগে জলাশয়ে ইলিশ চাষ হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। এই বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করছে সরকারি মৎস্য দফতর।
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ডায়মন্ড হারবারে যে দু’টি জলাশয়ে এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে তার সঙ্গে নদীর যোগাযোগ রয়েছে। নদীর জোয়ারের স্রোতে ভেসে ইলিশের পোনা এই জলাশয়ে ঢুকে যাওয়ার পর তাকে বড় করার চেষ্টা চালাচ্ছে মৎস্য দফতর।
বিধানসভায় নিজ কার্যালয়ে বসে চন্দ্রনাথ বলেন, ‘ইলিশ মাছ যেহেতু নদীর মাছ, তাই এদের জন্য উপযুক্ত খাদ্যের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। প্রাণীজ ও উদ্ভিজ্জ খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। মাছগুলি বড় হচ্ছে। যদিও আমাদের আসল লক্ষ্য হল, এই মাছের প্রজনন করানো। প্রজননের জন্যই সমুদ্র থেকে উজানে নদীর মিষ্টি পানিতে চলে আসে ইলিশ। প্রজননের উপযুক্ত সেই পরিবেশ ধীরে ধীরে তৈরি করছি আমরা। নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। ’
ইলিশ চাষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বাড়ন্ত মাছের ছবি তুলে মাঝে মাঝে তা মন্ত্রীকে দেখাচ্ছেন। চন্দ্রনাথের কথায়, ‘মাছের ছবি দেখেছি। দেখা যাক কী হয় এই উদ্যোগের ফলাফল। ’
এখন সাফল্যের দিকে তাকিয়ে দফতরের মন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা। তিনটি জলাশয়ের ১০০ গ্রামের ইলিশ যেন আরও বড় হয়ে ওঠে, এমনটাই আশা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
ভিএস/এমএ