বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে আমরা যা সাহায্য চেয়েছি তার আশ্বাসও পেয়েছি।
এর আগে আসন্ন বসন্তোৎসব নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। দোলের দিন বসন্তোৎসব করা হবে না বলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রথমদিকে জানিয়েও দেয়। খবর পেয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বসন্তোৎসবে বিশ্বভারতীকে সাহায্য করার আশ্বাস দেন।
কিছুদিন আগেই বীরভূমের জেলার দুই মন্ত্রী বোলপুর বৈঠক বসন্তোৎসবে সব ধরনের সাহায্যের জন্য আশ্বাস দেন বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষকে। তারপর মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কনফারেন্স রুমে এই নিয়ে বৈঠক হয় বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা অব্দি।
ওই বৈঠকে বিশ্বভারতীর উপাচার্যসহ উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। বৈঠক থেকে বের হয়ে বসন্তোৎসব নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্য ও বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষরা। তারপরই জানিয়ে দেওয়া হয় দোল পূর্ণিমার দিনই হবে বিশ্বভারতীতে বসন্তোৎসব।
প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষদের দাবি, বসন্তোৎসব নিয়ে রাজ্যের মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাই সেই আবেগকে গুরুত্ব নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে এই সিদ্ধান্তে খুশি রাজ্যের নাগরিকরাও। কারণ প্রতিবছরই দোলের দিন বহু মানুষের জমায়েত হয় শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীতে বসন্তোৎসবে মেতে ওঠেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। তবে এবারের বসন্তোৎসবে পরিবর্তন হয়েছে স্থানের। আশ্রম মাঠের পরিবর্তে পৌষমেলার মাঠে হবে বসন্তোৎসব।
এ ব্যাপারে দেশের রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি তথা পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপক সুশোভনবাবু বলেন, বসন্তোৎসব সুষ্ঠুভাবে করার জন্যই মেলার মাঠে করা হবে। মেলার মাঠে সব ধরনের সুবিধা রয়েছে। তাই যাতে কেউ পদপিষ্ট না হয় বা অন্যান্য অসুবিধা না হয় সেজন্য পৌষমেলার মাঠই বেছে নেওয়া হয়েছে। আমরা সেই মতের সঙ্গে সহমত হয়েছি। তাই যেদিন বসন্তোৎসব হয় সেদিনই হবে।
বিশ্বভারতীতে গতবছর বসন্তোৎসবে ভিড় হয়েছিল আড়াই লাখ মানুষের। ভিড় সামাল দিতে না পারায় পদপৃষ্ট হয়েছিলেন অনেকে। এছাড়া অসৎ কর্যকলাপ নজরে আসে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি বসন্তোৎসবে ৩৫ বস্তা অবর্জনা পরিষ্কার করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর এবছরের পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
পৌষমেলা উপলক্ষে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় ডিজে বক্স লাগানো থেকে শুরু করে মেলার দোকানের জায়গা বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেই কারণেই বিতর্ক এড়াতেই বসন্তোৎসবে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। ঠিক করা হয়েছিল ১৮ ফেব্রুয়ারি হবে বিশ্বভারতীতে বসন্ত বন্দনা। পরের দিন অর্থাৎ ১৯ তারিখ হবে বসন্তোৎসব এবং এ অনুষ্ঠান সীমাবদ্ধ থাকবে বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেই।
এরপরই ঐতিহ্যশালী এই বসন্তোৎসবের পরিবর্তনের বিষয়টা ভালোভাবে নেননি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই রাজ্য ও বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষরা জানিয়ে দেন বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য মেনে দোলের দিনই হবে বসন্তোৎসব।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
ভিএস/এএটি