নোটিশ বোর্ডের ধার ঘেঁষে প্লাস্টিকের সারি সারি চেয়ার জড়ো করা। কাঠের চৌকো বেশ কিছু টেবিলও এক কোণে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
আপাতত পাওয়া যাচ্ছে চা, কফির সঙ্গে পকোড়া, স্যান্ডউইচ, ওমলেট, বাটার টোস্ট। বাকি চাউমিন, মোগলাই, কাটলেট, ফিশ চপসহ ভিন্ন ধরনের পদ পরবর্তী পর্যায়ে বিবেচনা করে রাখা হবে বলে, জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কফি হাউস ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি। তবে আপাতত ওপরের ফ্লোর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সোসাইটির সম্পাদক তপন পাহাড়ি বলেন, সবকিছুই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) থেকে খুললেও এখনো আগের মতো মানুষজন আসছেন না। তার ওপর কলকাতায় করোনা বেড়েই চলেছে। আবার দীর্ঘদিন বন্ধ রাখলে বিক্রি-বাট্টা না হলে তখন কর্মচারীদের বেতন দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার থেকে কফি হাউজের দরজা খুললেও শনিবারেও (৪ জুলাই) সেরকম জমজমাট চোখে পড়লো না। প্রবেশদ্বারে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট লিখে দিয়েছেন, ‘নো মাস্ক, নো এন্ট্রি’। ভেতরে প্রবেশ করতে হলে দ্বারক্ষীর কাছে থার্মাল মেশিনে পরীক্ষা দিতে হবে শরীরের তাপমাত্রা। স্যানিটাইজার দ্বারা হাত হতে হবে জীবাণুমুক্ত। অবশ্য আড্ডাতীর্থ খোলার তৃতীয় দিনে স্মৃতির আবেগকে উসকে দিয়ে হাজির হয়েছিলেন কিছু মানুষ। বইপাড়ায় বই কিনতে আসা যুগল কলেজ শিক্ষার্থী কথায়, কফি হাউস খুলেছে আর আমরা আসবো না তা কি হয়! এখানেই আমাদের প্রথম প্রেম। দুই দিন বৃষ্টি থাকার কারণে আসতে পারিনি তাই আজ আর মিস করতে পারলাম না।
অপর প্রান্তে পঞ্চাশোর্ধ একাকী টেবিলে বসে থাকা এক ব্যক্তিটি কথায়, একজনের জন্য অপেক্ষা করা। একটা বইয়ের প্রুফ দেখতে এসেছি। জীবনের ২০টা বছর এখানে বসেই জীবিকা চালিয়ে গেলাম। বলতে পারেন খোলার পরে নিজের কর্মস্থলে ফিরেছি। তবে এখানে আগের মতো পরিস্থিতি নেই। তাই বেশিক্ষণ চেয়ার আটকে রাখতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।
কফি হাউস সোশ্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের অচিন্ত্য লাহা বলেন, বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে ততদিন এর আড্ডা ভুলতে পারবে না বাঙালি। জমজমাট ভিড়, আড্ডা, কোলাহল কফি হাউসের বরাবরের সঙ্গী। সেটা কতদিনে ফিরে আসে, এখন সেটাই দেখার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২০
ভিএস/এএটি