কলকাতা: বাণিজ্য শাস্ত্রের হিসাব অনুযায়ী, জোগান কম কিন্তু চাহিদা বাড়লে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ে। তখন জোগান বাড়ানোর চেষ্টা চলে।
আবার জোগান বেশি, চাহিদা কম থাকলে বাজারে পণ্যের দাম অনেকটাই কমে যায়।
পশ্চিমবঙ্গে লকডাউনের অজুহাতে চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চললেও উল্টো খোলা বাজারে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত রুপি পর্যন্ত কমতে শুরু করেছে। মমতা ও মোদী দুই সরকারের সহযোগিতায় রেশনে সবাইকে বিনা পয়সায় মাসে মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। ৫ কেজি দিচ্ছে রাজ্য ও ৫ কেজি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দুই সরকারের উদ্যোগে রাজ্যের রেশন ব্যবস্থার গুণগত এবং অর্থগত আমূল বদল এসেছে। এর জেরে গত কয়েক মাস ধরে লাইন বাড়ছে রেশন দোকানে এবং সেই লাইনের কোনো আর্থিক শ্রেণীবিন্যাস নেই। কারণ নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, সবার হাতেই এখন রেশন কার্ড। করোনা ভাইরাসের এ দুঃসময়ে বিনা পয়সার চাল কেউই হাতছাড়া করতে চাইছেন না।
রেশন থেকে যে চাল দেওয়া হচ্ছে তা মাঝারি মানের অর্থাৎ সে চাল মোটাও না আবার একেবারেও সরু না। তবে বাঙালির খাদ্যের মূল উপাদান ভাত, তাও আবার পাওয়া যাচ্ছে বিনা ব্যয়ে এবং তার গুণগত মানও ভালো।
ফলে চলমান পরিস্থিতিতে বাজারে পড়ে যাওয়া অর্থনীতিতে অনেকেই অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন রেশনের চালে। আর এর জোগানোও পর্যাপ্ত। এ কারণেই বর্তমানে মাছি তাড়াচ্ছেন খোলা বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলোয় ক্রেতা নেই বললেই চলে। যেটুকু বিক্রি হচ্ছে তা মূলত সরু চাল। কারণ গত তিনমাসে ক্রেতাদের বেশিরভাগই বিনামূল্যের রেশনের চালে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
ফলে চালের দাম অনেকটাই কমতে শুরু করেছে খোলাবাজারে। লকডাউনের আগে মোটা চালের দাম ছিল ২৮ রুপি, এখন তা কমে কেজি প্রতি হয়েছে ২৪ রুপি। সরু চাল যা ৫০ থেকে ৫২ রুপি ছিল, তা নেমে কেজি প্রতি দাম হয়েছে ৪৪ রুপি। মিনিকেট বা মাঝারি মানের চালের দামও কেজি প্রতি দুই থেকে তিন রুপি কমেছে।
কলকাতা পাইকারি ও খুচরা এক চাল বিক্রেতা বলেন, ‘রেশনে জোগান পর্যাপ্ত হওয়ায় চালের ক্রেতা একদম নেই বললেই চলে। আগে তবু সরু চাল বিক্রি হতো। এখন সেটাও কমে গেছে। কারণ সারা জীবন যারা সরু চাল কিনে খেয়েছেন, তারাও রেশনের চাল তুলছেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২০
ভিএস/এফএম