কলকাতা: বাংলাদেশের বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মঞ্চ হচ্ছে কলকাতায়। এটি হচ্ছে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে মিশন প্রাঙ্গণে।
‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ’ উদ্বোধন হবে বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস তথা বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকীতে।
এ বিষয়ে উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, মিশন প্রাঙ্গণে যেখানে দেশের জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে সেই মঞ্চের বেদী ২০০৭ সালে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন মিশন প্রধান তথা বর্তমানে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান। কিন্তু এতদিন বেদীতে কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে সেটিকে মঞ্চে পরিণত করতে ডেকোরেটার্সের প্রয়োজন পড়তো । এবার থেকে আর তাদের প্রয়োজন পড়বে না। এখন তা পূর্ণাঙ্গ মঞ্চে রূপান্তরিত হলো। তবে মঞ্চের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
মিশন প্রধান আরও বলেন, কলকাতায় নজরুল মঞ্চ, বিবেকানন্দ মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, শিশির মঞ্চ আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নামে কোনো মঞ্চ ছিল না। এছাড়া এই মিশনে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। বিশ্বের মধ্যে কলকাতায় এই বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের গুরুত্ব তাই অপরিসীম । সেই ভাবনা থেকেই বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মিশন প্রাঙ্গণে নবনির্মিত মঞ্চের নাম ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ’ রাখা হয়েছে।
তবে শুধু মঞ্চ নয়, এরসাথে পূর্ণভাবে স্থায়িত্ব পেয়েছে গ্রিন রুম এবং এর বর্ধিত অংশ। তবে চলমান করোনাকালে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীতে মঞ্চের উদ্বোধন হবে একেবারেই সাদামাটা। বর্ধিত আকারে অনুষ্ঠান হতে পারে আগামী ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের উৎসবে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষে যেখানে জাতির পিতার আবক্ষ ভাস্কর্য আছে সেখানে শাহাদাত বার্ষিকীতে এবার পুষ্পার্পণ করা হবে না।
এর কারণ হিসেবে তৌফিক হাসান বলেন, চলমান করোনাকালে ভারতে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। বেকার হোস্টেল হলো একটি ছাত্রাবাস। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় হোস্টেলের ভেতর দিয়ে কক্ষে যাওয়াটা উচিত হবে বলে মনে হয় না। সে কারণে এবার ১৫ আগস্টের যাবতীয় অনুষ্ঠান মিশন প্রাঙ্গণেই করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।
ফলে ২০০৭ সালে তৎকালীন উপ হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের উদ্যোগে যে মঞ্চের বেদী স্থাপিত হয়েছিল, ২০২০ সালে বর্তমান উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের প্রচেষ্টায় সেটি পূর্ণ স্থায়িত্ব পেল ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ’ নামে।
একটি মিশনে কর্মকর্তারা আসে যায় কিন্তু তাদের সহযোগিতা ও অবদানে তৈরি হয় ইতিহাসের এক একটি পাতা। ঠিক যেমন, হোসেন আলীর সহযোগিতায় পাকিস্তান দূতাবাস পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ দূতাবাসে। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল বিদেশের মাটিতে এই মিশনে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উড়ে। পরে ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এই মিশনে পদচারণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এরপর গঙ্গা-পদ্মা দিয়ে বয়ে গেছে সময়ের পানি। চলে গেছেন বহু কর্মকর্তা। কিন্তু তাদের অবদানের অংশ জড়িয়ে আছে এই মিশনের স্মৃতিকোটায়। এমনই এক পরিকল্পনায় কলকাতার বুকে তৌফিক হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন তৈরি করলো ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ’।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
ভিএস/এইচএডি