ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারত-পাক বাণিজ্য না বাড়ায় আক্ষেপ পাক হাইকমিশনারের

ব্যুরো চিফ, কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১২
ভারত-পাক বাণিজ্য না বাড়ায় আক্ষেপ পাক হাইকমিশনারের

কলকাতা : দীর্ঘ ৩৫ বছর দু’টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী সীমান্ত পারাপার করেননি। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পাকিস্তানে পা রাখেননি, পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী ভারতে আসেননি।



এমন পরিস্থিতিতে শুধু আলোচনায় বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি হয়? ‘ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য’ নিয়েই মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক আলোচনাসভায় ভারতে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ মালিকের কথায় এমন গভীর আক্ষেপ ঝরে পড়লো।
 
শুক্রবার তিনি বলেন, সিয়াচেন, কাশ্মীর, পানির সমস্যা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রভৃতি সুনির্দিষ্ট আটটি মূল বিষয়ে এখন পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে কোনো সমঝোতাসূত্র বের হয়নি। কিভাবে ভারত পাকিস্তান বাণিজ্যের অগ্রগতি হবে?

এদিন এই আলোচনা সভাতেই আলোচক ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি। এই অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মার্চেন্ট চেম্বার্স অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপক জালান, ইইপিসির ভাইস চেয়ারম্যান অনুপম শাহ, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান রমেশ আগরওয়াল প্রমুখ।

কলকাতায় হোটেল হিন্দুস্থানে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি এরাজ্যের নানা শিল্পক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উন্নতির কোনো কোনো সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে এবং এরাজ্যের শ্রমিকের মজুরি কত কম, শিল্পোন্নয়নের পরিবেশ কত ভালো ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ বলেন।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার বলেন, দু’টি দেশের ঐতিহ্যের মিল, সংস্কৃতির মিল, বেড়ে ওঠা জনজাতির সম্পৃক্ততার কথা বারেবারে তোলা হয়। কিন্তু তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়ে কি ভারতের বাণিজ্যে? বললেন, যে দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের কিছু মাত্র মিল নেই, সেই দেশের সঙ্গে ভারত বাণিজ্য করছে ৬৫ থেকে ৭০ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, গত ৬৫ বছরে পাকিস্তান ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাকুল্যে ৩০০ কোটি ডলার। প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কেন আমরা দু’টি দেশের সম্প্রদায়গত সম্প্রীতির সুবিধা নিতে পারছি না?

তিনি জানান, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতে আসছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম বাণিজ্যমন্ত্রী। সেই সময়েই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক চূড়ান্ত আকার নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিন তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান–পাকিস্তান-ভারত (টাপি) গ্যাস পাইপলাইন চুক্তির বিষয়েও তিনি জানান, খুব দ্রুতগতিতেই এর কাজ চলছে।

আলোচনা সভায় সৈয়দ মালিক বলেন, দু’টি দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতি ঘটানোর জন্যই আমদানি রফতানিতে মাসুল বহির্ভূত নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়াই উচিত। শুধু তাই নয়, চালু হওয়া উচিত মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা। যার মধ্য দিয়ে একটি দেশের একাধিক শহরে বাণিজ্যিক স্বার্থেই যাতায়াত করার সুবিধা থাকবে।

সৈয়দ মালিক এদিন জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি পাকিস্তানের ওয়াঘা সীমান্তে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বসছে। এর ফলে বাণিজ্যিক অগ্রগতি ঘটবে দু’টি দেশের মধ্যে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার এদিন ভারত পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতি ঘটাতেই দু’টি দেশের মধ্যে সুস্থ স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, দু’টি দেশের মধ্যে সংস্কৃতির আদান-প্রদান করতে হবে। পাকিস্তানের কিছু বিনোদনের চ্যানেলেও এদেশের দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া উচিত। তবেই স্বাভাবিক পথে সম্পর্কের উন্নতি হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।