ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

৩৬তম কলকাতা বইমেলা

বই, বউ আর বুদ্ধি ধার দিতে নেই: মমতা

রক্তিম দাশ, ব্যুরো চিফ. কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১২
বই, বউ আর বুদ্ধি ধার দিতে নেই: মমতা

কলকাতা: ইতালীয় সুরকার ডিভান্ডির সুরের মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার সূচনা হয়েছে ৩৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার। আর এদিন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা দিয়েছেন, খুব দ্রুতই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কবি নজরুল ইসলামের রচনাবলী প্রকাশ করা হবে।



এদিন কলকাতার ইর্স্টার্ন বাইপাসের পাশে মিলনমেলা প্রাঙ্গণে বিকাল ৩টায় প্রতীকী ঘণ্টা বাজিয়ে মেলার উদ্বোধন করেন ইতালির বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও অফিসার্স অব ব্রিটিশ এম্পায়ার সম্মাননাপ্রাপ্ত বেপ্পে সেভেরন্যিনি।

এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এছাড়াও সাম্মানিক অতিথি সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, ভারতে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত মন্তেফোর্থে, বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা কবির বেদী, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি, পর্যটনমন্ত্রী রচপাল সিং, মেয়র শোভন চ্যাটার্জি, নজরুল পরিবারের সদস্য কল্যাণী কাজিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রথমেই বইমেলার আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি সুপ্রকাশ বসু স্বাগত ভাষণ দেন।

ইতালির রাষ্ট্রদূত মন্তেফোর্থে বলেন, আমরা খুশি এবারের বইমেলায় ইতালিকে থিম করার জন্য। আমরা আশাবাদী এ ক’দিনে আপনারা ইতালিয় সংস্কৃতির একটি পরিচয় পাবেন।

সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, পৃথিবীকে বইশূন্য করা সম্ভব নয়। বউ আর বই দু’টোই মানুষের জীবনে প্রয়োজন। বউ না থাকলে আবার সাহিত্য হবে না।

উদ্বোধক বেপ্পে সেভেরন্যিনি বলেন, আমি দ্বিতীয়বারের জন্য কলকাতা এলাম। এখানে ট্রাফিক আছে, খুব গরম, তাও আমার এই শহরকে ভালো লাগে। আর আমার দেশের সাথে এই শহরের খুব মিল পাই। ইতালি হচ্ছে ল্যান্ড অব হিউম্যান নেচার। এটাও এই শহরের বৈশিষ্ট্য।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, আজকের এই বইমেলায় সবাইকে স্বাগত। আমার কাছে কল্যাণী কাজি এসেছিলেন। ওনারা খুব ভালো কাজ করেছেন। কবি নজরুলের সাড়ে ৩ হাজার গান সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশেও ওনাকে নিয়ে ভালো কাজ হয়েছে। এই সব নিয়ে আমরা যেমন রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশ করেছি, সেরকমই সরকারিভাবে নজরুল রচনাবলী প্রকাশ করব। এর সাথে স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলীও প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, এই বইমেলা সারা ভারত ও বিশ্বের গর্ব। গতবছর ইতালি ভারতকে থিম করেছিল, এবার আমরা ওদের করেছি।

রসিকতা করে তিনি বলেন, বউ, বই আর বুদ্ধি ধার দিতে নেই। ওগুলো দিলে আর ফেরৎ আসে না।

এদিন তিনি বলেন, কমপিউটারে টাইপ করে কবিতা লেখা যায় না। ভালো লেখক যাদের প্রকাশক নেই, তাদের লেখা প্রকাশ করার দায়িত্ব নিতে হবে। বই অন্তরের মিউজিয়াম।

সবশেষে গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চ্যাটার্জি সমাপ্তি ভাষণে বলেন, আজ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও আগামীকাল বুধবার থেকে দর্শকদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হবে। মেলা চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

এদিকে, মঙ্গলবার মেলার উদ্বোধন হলেও এখনও স্টলগুলো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন তৈরির কাজও সম্পূর্ণ হয়নি।

গিল্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্যবার মেলা শুরুর অন্তত ১০দিন আগে মিলনমেলা কর্তৃপক্ষ মাঠ গিল্ডের হাতে ছেড়ে দিত, সেখানে এবার মাত্র ৭ দিন সময় পাওয়া গেছে। সব স্টল চালু হতে কিছুটা দেরি হওয়ার কথা জানিয়েও বলা হয়, দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে, এবারও বইমেলাকে কেন্দ্র করে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পার্ক সার্কাস কানেক্টরে উড়ালপুল তৈরির জন্য বেশ কিছুদিন ওই অঞ্চলে যানজট লেগেই আছে। আর মেলার সময় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বইমেলায় আসায় যানজটের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে মেলা চত্বরের আশেপাশে প্রতিদিন দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘন্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।