আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম রিয়াং শরণার্থীদের ফিরে যাবার কথা বললেন মিজোরামে।
তিনি বললেন, ফিরে গেলে রিয়াং গ্রামগুলোতে কি কি উন্নয়ন করা হবে সে কথাও।
হবে না জানাতে ভুললেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শনিবার পি চিদাম্বরমকে নিয়ে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার আগরতলা থেকে বেলা পৌনে দুটোয় গছিরাম পাড়া হেলিপ্যাডে নামে। পাশেই গছিরাম পাড়া কমিউনিটি সেন্টারে হয় আলোচনা। সেখানে রিয়াং শরণার্থী শিবিরের
প্রতিনিধিরা, রাজ্য সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি জি কে রাও, উত্তর ত্রিপুরা জেলার জেলা শাসক প্রশান্ত কুমার, ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক সৌম্যা গুপ্তা, দুই জেলার পুলিস সুপার,মিজোরামের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আধিকারিক ডেভিড লাল থাললিয়াঙ্গানা উপস্থিত ছিলেন।
পি চিদাম্বরম শরণার্থীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। এতে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের শিবিরে থাকা মানেই মানব সম্পদের অপচয়। এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। শরণার্থী শিবিরে থাকা মানুষজন জীবনের সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। আমরা চাই না কোন মানুষের জীবন এভাবে নষ্ট হয়ে যাক। ’
এরপর শরণার্থীদের পক্ষ থেকে ২৩ দফার দাবি সংবলিত স্মারক লিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন শরণার্থী নেতা ব্রুনো মেসা। তিনি বলেন, ১৫ বছর যাবত হাজার হাজার মানুষ ভবিষ্যৎহীন জীবন কাটাচ্ছেন। মাঝে কয়েকবার কিছু শরণার্থী তাদের পিতৃভুমিতে ফিরে যাবার চেষ্টা করেছে। অনেকে মিজোরামে গেছেনও। কিন্তু ফিরে যাবার পর তারা সেখানে বেশি দিন থাকতে পারেননি। আবার ত্রিপুরায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। যেটা কোনভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।
অালোচনায় উপস্থিত শরণার্থী ক্যাম্পের সদস্যরা একযোগে মিজোরামে তাদের ফিরিয়ে নেবার কথা বলেন। ‘আমরা যে জমিতে থাকতাম, যে জমিতে চাষ করতাম তা আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। জমির অধিকার ছাড়া পুনর্বাসন অর্থহীন। আমাদের জমি মিজোরামে দখল হয়ে গেছে সরকারি মদতেই। অনেক জমি বনভূমির এলাকা বলে ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার। ’
এক ঘণ্টার অল্প কিছু বেশি সময় চলে এদিন এই সভা। শরণার্থীদের পক্ষ হয়ে এলাকার রিয়াং জনজাতি অংশের মানুষও অন্যরা তিনটি আলাদা স্মারকলিপি জমা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। যার মূল কথা ছিল, ‘রিয়াং শরণার্থীদের
মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজ ভূমি মিজোরামে ফিরতে দাও। এর জন্য যা করা উচিত সে দায়িত্ব নিক কেন্দ্রীয় সরকার ও মিজোরাম সরকার। ’ ত্রিপুরা সরকার যেভাবে মিজোরামের রিয়াং শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাও সভায় অলোচনা করেন শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১২