ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সিপিএমের বিগ্রেড সমাবেশে জনপ্লাবন

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২
সিপিএমের বিগ্রেড সমাবেশে জনপ্লাবন

কলকাতা: কে বলবে পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতায় নেই তারা। অন্তত রোববারে বিগ্রেড সমাবেশ দেখে তা মনে হয়নি।

এদিন সিপিএমের জনসমাবেশের জনপ্লাবন মাত্র ৯ মাস আগে পরিবর্তনের হাওয়ায় ক্ষমতায় আসা তৃণমূলের কপালে ভাঁজ ফেলতে পারে।

প্রায় ৪০ বছর পর বিরোধী দলের আসনে বসে ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। একের পর এক নির্বাচনী বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে আজকের ব্রিগেড ছিল সিপিএম নেতৃত্বের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ। ১৯ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডের জনজোয়ার
নিঃসন্দেহে আশ্বস্ত করবে সিপিএম নেতৃত্বকে।

বিগ্রেডের মাঠে উপস্থিত সিপিএম নেতা রবীন দেব বাংলানিউজকে বলেন, আজ আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১০ লাখ কর্মী, সমর্থক এসেছেন সারা রাজ্য থেকে।

যেরকম স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাজার প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ এসে ব্রিগেড ভরিয়েছেন তাতে দলের মনোবল যে বাড়বে তাতে সম্দেহ নেই।

ব্রিগেডের জনসমুদ্র দেখে নিঃসন্দেহে উজ্জীবিত সিপিআইএম নেতৃত্ব। তবে একই সঙ্গে সমাবেশের মঞ্চ থেকে দলীয় সমর্থকদের সতর্কবার্তাও শুনিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।

গরিব, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের জনসমর্থন হারিয়ে সরকার থেকে সরে যেতে হয়েছিল সিপিএমকে। আপাতত সেই গণভিত্তি পুনরুদ্ধার করাই যে দলের প্রাথমিক দায়িত্ব তা মনে করিয়ে দিয়েছেন বিমান বসু থেকে শুরু করে সূর্যকান্ত মিশ্র সকলেই।

একই সঙ্গে ব্রিগেডের জনসমুদ্র দেখে আত্মসন্তুষ্ট না হওয়ার জন্যও দলীয় কর্মীদের এদিন পরামর্শ দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

অন্যদিকে দীর্ঘ নীরবতার পরে এদিন সরব হলেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ তিনি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করলেন কঠোর ভাষায়। একটি একটি করে বিষয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তিনি দেখান প্রতিটি ক্ষেত্রে ৯ মাসের সরকার ব্যর্থ হয়েছেন।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন অতীতেও এতো বড় জমায়েত হয় নি। এর থেকে বোঝা যায় আমরা শক্ত জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের এগোতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল কিন্তু কৃষকের আত্মহত্যা নয় ধান-পাট-আলু দাম পাচ্ছে না কৃষক। এরপরে বোরো ধান চাষ করবে না কৃষক। খাদ্যাভাব দেখা দেবে। পঞ্চায়েতগুলো চলছে না।

তিনি আরো বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সরকারি অফিসারেরা পঞ্চায়েত চালাবেন, মানুষের দরকার নেই। যেদিকে তাকাই সেদিকে একই অবস্থা। কারখানা তুলে দেওয়া সরকারের কাজ। কেউ পশ্চিমবঙ্গে শিল্প করতে আসছে না। বিদ্যুতের অবস্থা ভয়াবহ। কয়লা কেনার পয়সা নেই বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ। পরিবহণ কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না সরকার। উৎসব হচ্ছে কিন্তু শ্রমিকদের মাইনে দেওয়া যাচ্ছে না। একদিনে মন্ত্রীদের ভাতা বাড়িয়ে দেওয়া হল।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এতো শিশু মারা যাচ্ছে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার। পশ্চিমবঙ্গে অরাজগতা চলছে। সমাজবিরোধীরা ভাবছে এখন তারাই রাজত্ব করছে অসুবিধা কি আছে। পাহাড়ে অশান্তি আরও বেড়েছে। সেখানে বারুদ জমা
হচ্ছে। বর্তমান সরকার দার্জিলিংয়ে, জঙ্গলমহলে যারা অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করেছে। এতে সমস্যার সমাধান হয় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।