ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

২৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল নিয়ে তাল ঠুকছে রাজ্যের শাসক-বিরোধী দুপক্ষই

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে হরতাল  নিয়ে রাজ্য সরকার ও বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির বিরোধ চরমে পৌঁছল।

শনিবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি হরতালে যোগ না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

হরতালের দিন পরিবহণ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে মরিয়া দফতরের মন্ত্রী মদন মিত্র এদিন শহরের অটোচালকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শ্রমিক সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, ধর্মঘটের দিন কাজে যোগ না দিলে কোনোরকম ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি অধিকার নেই রাজ্যের। রাজ্য সরকারকে হিংস্র বলেও কটাক্ষ করেছেন তারা।

২৮ ফেব্রুয়ারি দেশের ১১টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে সাধারণ ধর্মঘট ব্যর্থ করতে শুক্রবার থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য সরকার।

সেদিন রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তর মহাকরণে দাঁড়িয়ে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র রাষ্ট্রায়াত্ব পরিবহন সংস্থার কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, বনধের দিন কাজে যোগ না দিলে তার প্রভাব পড়তে পারে তাদের সার্ভিস রেকর্ডে। ছুটি তো মঞ্জুর করা হবেই না বরং ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুপস্থিত থাকলে সিনিয়রিটি হারাতে পারেন কর্মচারীরা।

শনিবারও সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন তিনি। এদিন মহাকরণে দাঁড়িয়েই পরিবহণ মন্ত্রী কলকাতার অটো রিকশা চালকদের হুমকি দিয়ে বলেন, শহরের ৭০ শতাংশ অটোই বেআইনি। অটো চালকরা ধর্মঘটে অংশ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।

ওদিকে পরিবহণমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিকে ফাঁকা হুমকি বলে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ’র রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী।

এদিন শ্যামলবাবু চক্রবর্তী বলেন, সার্ভিস রুলে সরকারি কর্মচারীদের হরতাল করার অধিকার রয়েছে। ফলে আইনত তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না সরকার। হরতাল বানচাল করতে হিংস্র হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকার। তাই কর্মচারীদের ভয় দেখাতেই এই সব কথা বলছেন মন্ত্রী।
সিপিআই নেতা ও সংসদ সদস্য গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, আদালত কোনো হরতালকে বেআইনি ঘোষণা না করলে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার।

ধর্মঘটের আহ্বানকারী ১১টি শ্রমিক সংগঠনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সার্ভিস রুল ১৯৮০ পার্ট ১ অ্যাপেন্ডিক্স ৬ এর ক্লজ ৪ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করা এবং হরতালের অধিকার রয়েছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও শ্রমিকদের হরতালের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তবে ধর্মঘটের বিরোধিতায় শনিবারও কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শ্রম দফতরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শ্রমিকদের হরতাল না-করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

২৮ ফেব্রুয়ারি গোটা দেশ জুড়ে হরতাল ডেকেছে বাম-ডান ১১টি শ্রমিক সংগঠন। কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে তাদের হরতাল। কিন্তু, উল্লেখযোগ্যভাবে হরতালের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে মমতা ব্যানার্জি সরকার।

তবে শ্রমিক সংগঠনগুলির মতে, রাজ্য সরকারের এই কঠোর অবস্থানের ফলে হরতালে  যোগ দিতে আরও উৎসাহিত হবে শ্রমিক-কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।