ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতে চলছে হরতাল, আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
ভারতে চলছে হরতাল, আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গে সড়কে গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাম সমর্থকরা। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের বিবিধ নীতির প্রতিবাদে দুই দিনব্যাপী (২৮ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ) ভারতজুড়ে হরতালের ডাক দিয়েছে বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক দল, বিভিন্ন সংগঠনসহ ভারতের ব্যাংককর্মচারী সংগঠনগুলো। চলমান হরতালের প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যস্ততম সড়কগুলোতে টায়ারের আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন হরতাল সমর্থনকারীরা। সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় হরতাল সমর্থনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্ক এলাকায় ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভ মিছিল এগিয়ে নিয়ে যায় হরতাল সমর্থনকারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে শুরু হয় হরতাল সমর্থনকারীরা ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তি। এ হরতালের জেরে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে যাদবপুরে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থনকারীদের বচসা বাধে। এছাড়া উত্তর ২৪পরগণার যশোর রোডে জোর করে গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন হরতাল সমর্থনকারীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিয়ালদহগামী রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ট্রেন কিছুক্ষণের জন্য আটকে দেয় হরতাল সমর্থনকারীরা। রাজ্যের একাধিক এলাকায় গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বাম সমর্থকরা।  বাম নেতাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যাংক, বীমা, রেল বেসরকারিকরণের দিকে এগোচ্ছে এবং শ্রমিকদের মানুষ মনে করছে না, সেই প্রতিবাদে হরতাল ডাকা হয়েছে। এর জেরে সোমবার (২৮ মার্চ) সপ্তাহে কর্মদিবসের শুরুর দিনে অনেকটাই প্রভাব পড়েছে কলকাতাসহ রাজ্যে। অন্যান্য দিনের মতো এদিন পথে লোকজন অনেকটাই কম। যান চলাচল খুব একটা স্বাভাবিক নয়।  
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পরই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছিল, তারা হরতালের রাজনীতি সমর্থন করেন না। হরতাল পালন করে সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হয় না। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হরতালের রাজনীতি কড়া হাতে মোকাবিলা করছেন।

রাজ্য সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, সব অফিস খোলা থাকবে। অফিসে না এলে কর্মীদের একদিনের বেতন অথবা কর্মজীবনের একদিন বাতিল বলে গণ্য হবে। এমনকি অনুপস্থিত থাকার উপযুক্ত কারণ দর্শাতে না পারলে কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি জোর করে হরতাল করার চেষ্টা হলে আইনগতভাবে পুলিশকে কড়া হাতে মোকাবিলা করার কথা জানানো হয়েছে। ২২ মার্চ হরতালের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতের শ্রমিক সংগঠনগুলো। কেন্দ্রীয় সরকার শ্রমিক বিরোধী, কৃষক বিরোধী, জনবিরোধী নানা অভিযোগের কারণে হরতাল ডাকা হয়েছে। ২০২১ সালে, ভারতের ব্যাংক আইনে কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি রেল এবং জীবন বীমার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারিকরণের দিকে এগোচ্ছে। তার প্রতিবাদে এ হরতাল। এর সঙ্গে সড়ক, পরিবহন এবং বিদ্যুৎকর্মীরাও হরতালে শামিল হয়েছেন। রেল এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের শ্রমিকরা, কয়লা, ইস্পাত, তেল, টেলিকম, পোস্টাল, আয়কর এবং বীমাক্ষেত্রের কর্মীরাও হরতালে অংশ নিয়েছেন।

দেশটির বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এই হরতালে ব্যাংকিং পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হরতালের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এবং ইমার্জেন্সি অঞ্চলে ব্যাংকিং পরিষেবা চলবে অত্যন্ত সীমিত আকারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।