কলকাতা: প্রধান শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা মঙ্গলবার হরতালে আংশিক সাড়া মিলেছে ভারতে।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও কেরালায় ধর্মঘটীরা প্রভাব খাটাতে অনেকাংশে সফল হলেও অনান্য রাজ্যে স্বাভাবিক জীবনে সেভাবে ছন্দপতন ঘটেনি।
হরতালের তেমন প্রভাব পড়েনি দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ে। কয়েকটি ব্যাংক এবং বীমা সংস্থা ছাড়া জনজীবনে এ হরতাল রেখাপাত করতে পারেনি।
যদিও পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে হরতাল শিথিল করার কথা ঘোষণা করেছিল বিজেপি এবং শিবসেনার শ্রমিক সংগঠনগুলো। শ্রমিক সংগঠনগুলো হরতালে যাওয়া সত্ত্বেও মুম্বাইয়ের উড়ান পরিষেবা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল। প্রভাব পড়েনি বাস চলাচলেও।
তবে রাজধানী দিল্লির রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এদিন কোনও কাজকর্ম হয়নি। বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজকর্ম রোজকার মতোই চলেছে। অধিকাংশ দোকানপাটই এদিন বন্ধ ছিল।
রাজস্থানের জয়পুরেও হরতালে প্রভাবে ফেলেছে যান চলাচলে। পিঙ্ক সিটির ব্যাঙ্কেও কাজকর্ম প্রায় হয়নি।
তবে ব্যাংকে হরতালের প্রভাব নিয়ে দাবি, পাল্টা দাবি করেছেন হরতালের সমর্থক ও বিরোধীরা। ভারতের প্রধান শহরগুলোতে ব্যাংক খোলা থাকলেও কর্মী-হাজিরার সংখ্যা ছিল কম।
স্টেট ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দীপঙ্কর বসু জানিয়েছেন, ক্লার্কদের উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও অফিসাররা কাজে যোগ দিয়েছেন।
তবে চেন্নাই থেকে অল ইন্ডিয়া ব্যাংক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সিএইচ বেঙ্কটচলমের দাবি, রিজার্ভ ও স্টেট ব্যাঙ্কের ইউনিয়নগুলো এ হরতালে অংশ নিয়েছে। ফলে ক্লিয়ারিং বিভাগে কোনও কাজই হয়নি।
১১টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে দেশজোড়া হরতালের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ব্যাংকিং ও বীমা পরিষেবা এবং পরিবহণ ব্যবস্থায়। রেলকর্মীদের পাশাপাশি এদিনের হরতালে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মী। কলকাতা ছাড়াও দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো মেট্রোগুলিতে ব্যাংকিং, পরিবহণও অন্যান্য পরিষেবা প্রভাবিত।
সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমনীতি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বন্ধ, ন্যূনতম মজুরি আইনের পরিবর্তন, সমস্ত শ্রমিকের অবসরকালীন সামাজিক সুরক্ষা, সব সংস্থায় শ্রমিক সংগঠনের বাধ্যতামূলক নথিভুক্তি-সহ একগুচ্ছ দাবিতে ডান-বাম শ্রমিক সংগঠনগুলোর হরতালে স্বাভাবিক জনজীবন প্রায় থমকে গেছে।
সকাল থেকেই কেরালার রাস্তাঘাট শুনশান। রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের সড়কে বাস-অটো প্রায় চলছে না।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতো `সার্ভিস ব্রেক`-এর হুমকি না দিলেও উমেন চান্ডি সরকার ফতোয়া জারি করে বলেছে, ধর্মঘটে যোগ দিলে সরকারি কর্মীদের বেতন কাটা যাবে এবং অ্যাড-হক ও অস্থায়ী কর্মীদের চুক্তি বাতিল হবে।
দক্ষিণের অন্য দুই রাজ্য তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশেও যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে হরতালের।
দিল্লিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা অব্যাহত রাখতে জরুরি পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ আইন বা এসমা জারি করেছে শীলা দীক্ষিত প্রশাসন।
আসাম, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাডু এবং বিহারের মতো রাজ্যগুলোতেও ১১টি শ্রমিক সংগঠনের হরতালের জেরে ব্যাংকিং, টেলিফোন, বীমা ও পরিবহণ-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো প্রভাবিত হয়েছে যথেষ্টই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১২