কলকাতা: চলতি বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চালু হতে চলেছে 'স্বাধীনতা সরণি'। বাংলাদেশের মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা পর্যন্ত যে সড়ক পথটি আছে, সেটিরই নাম হতে চলেছে স্বাধীনতা সরণি।
এ নিয়ে আগামী ৩০ মে দিল্লিতে জয়েন্ট কন্সাল্টেটিভ কমিশন (জেসিসি) বৈঠক হবে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অর্থাৎ এস জয়শঙ্কর ও আবুল কালাম আব্দুল মোমেন ।
পাশাপাশি এই স্বাধীনতা সরণিকে ঘিরে ভারত-বাংলাদেশের জিরো পয়েন্টের কোনো একটি স্থানে দুই দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে।
এ ছাড়া দুই দেশের ওই মন্ত্রালয়ের মধ্যে পর পর আরও কিছু বিষয়ে বৈঠকের পর মোটামুটি চলতি বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা সরণির উদ্বোধন করবেন।
সম্প্রতি এ বিষয় নিয়ে ২০ মে কলকাতা ঘুরে গেছেন দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরান। তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও কলকাতার মেয়র তথা পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তাঁরা এ বিষয়ে হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরানকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
পাশাপাশি ইমরান তাদের সঙ্গে বৈঠকে আরও একটি প্রস্তাবে সম্মতি পেয়েছেন। সেখানে, কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী কার্যালয় অর্থাৎ বর্তমানে অরবিন্দ ভবনে একটি কক্ষ বা নির্দিষ্ট একটি জায়গা চাওয়া হয়েছে। স্থানটিতে তৎকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের একটি জাদুঘর গড়ে তোলা হবে।
এ প্রস্তাবে ফিরহাদ এবং জাগদীপ ধনকাড় জানিয়েছেন, নীতিগতভাবে তাদের কোনো আপত্তি নেই।
সব ঠিক থাকলে চলতি বছরে একদিকে যেমন দুই দেশের মধ্যে চালু হচ্ছে স্বাধীনতা স্বরণি এবং ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা, অপরদিকে চালু হতে চলেছে কলকাতায় তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী কার্যালয় জাদুঘর।
কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা সরণি মধ্যবর্তী সড়কের কিছু এলাকা এখনো মাটির পথ রয়েছে। সেগুলো দেখতে দিল্লি থেকে বাংলাদেশ হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এসেছিলেন কলকাতায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেয়। পরে বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। সেদিনের ওই সরকারের কার্যালয় ছিল কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোড।
বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হওয়ার পর, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কলকাতায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল এই ভবন থেকেই। ১৯৭৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভবনটি শ্রী অরবিন্দ ভবন নামে পরিচিতি পায়। বর্তামানে ভবনটি একটি ট্রাস্টের আওতায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
ভিএস/এসএ