আগরতলা (ত্রিপুরা): সরকারি চাকরি না করেও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শুভঙ্কর আচার্য। ত্রিপুরার খোয়াই জেলার অন্তর্গত তেলিয়ামুড়া এলাকার ১০,৩২৩-এর চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের এক সদস্য তিনি।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকতার চাকরি চলে যাওয়ার পর ১০,৩২৩-এর অনেক সদস্য যখন পরিবার কীভাবে চালাবেন তা ভেবে দিশেহারা। এ অবস্থায় নিজের দক্ষতা খাটিয়ে সংসার চালাচ্ছেন শুভঙ্কর। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতেই বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে বাজারজাত করে সংসার চালাচ্ছেন। পাশাপাশি শতাধিক দেশি প্রজাতির মুরগি পালনসহ সুগন্ধি ও জীবাণুনাশক ফিনাইল তৈরি করা শুরু করেছেন।
শুভঙ্কর বাংলানিউজকে বলেন, চাকরি হারানোর পর দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার চিন্তায় পাগল প্রায় হয়ে যান। কিন্তু হাল ছাড়েননি। এভাবে বসে থাকা যায় না, কিছু করে খেতে হবে। এ ভাবনা নিয়ে প্রথমে নিজ বাড়িতে দুটি ট্যাংক তৈরি করে বায়োফ্লক পদ্ধতির মাধ্যমে মাছ চাষ শুরু করেন। লাভের মুখ দেখে পরে আরও দুটি ট্যাংক তৈরি করেন মাছ চাষের জন্য। এখন মোট চারটি ট্যাংক রয়েছে।
সেই সঙ্গে সম্প্রতি তিনি সুগন্ধি ও জীবাণুনাশক ফিনাইল তৈরি করা শুরু করেছেন। এগুলো স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করছেন। মাছ চাষ ও জীবাণুনাশক ফিনাইল তৈরির পরিকল্পনা এলো কী করে? এ কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউব দেখে এ কাজ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
শুভঙ্কর বলেন, সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় তবে ভালো হতো। তিনি তার কাজগুলো ব্যাপক আকারে করতে পারতেন। লাভও বেশি হতো। তবে সহায়তার জন্য এখনও সরকারের কাছে কোনো আবেদন করেননি বলে জানান। আগামী দিনে তিনি এসব কাজ নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।
এসব করে মাসে এখন কতো আয় হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত না বললেও জানান, পরিবার চালাতে কোনো কষ্ট হচ্ছে না।
ত্রিপুরার ১০,৩২৩ এর চাকরি হারানো অন্যান্য শিক্ষকদের উদ্দেশে তার বার্তা- হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে লাভ নেই, লড়াই করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজকর্মে মনোনিবেশ করা উচিত। তবেই পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারবেন এবং সুখ-স্বাচ্ছন্দে ভরে উঠবে জীবন।
তার সহকর্মীদের বেশ কয়েকজন যারা এখন ১০,৩২৩ এর চাকরিচ্যুত শিক্ষক হিসেবে বেশি পরিচিত তাদের অনেকে এভাবে উদ্যোগী হয়ে কাজ শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
এসসিএন/আরবি