ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

তৃণমূল নেতা অভিষেককে ফের ইডির নোটিশ, টুইটে ক্ষোভ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
তৃণমূল নেতা অভিষেককে ফের ইডির নোটিশ, টুইটে ক্ষোভ 

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের কয়লাকাণ্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সমন পাঠিয়েছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।  

আগামী শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ইডির পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছে তাকে।

তবে কলকাতার কর্তারা নয় দিল্লির ইডি কর্তারা অভিষেককে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

প্রসঙ্গত, কয়লা কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘনঘন দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন ইডি কর্তারা। পরবর্তীতে অভিষেকের আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন যে বারবার দিল্লি যাওয়া অভিষেকের মতো নেতার পক্ষে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই সমস্ত জিজ্ঞাসাবাদ যদি ইডি কলকাতা করে তাহলে সুবিধা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইডি তাদের জেরার কাজ কলকাতায় স্থানান্তর করেছে।

তবে এদিন ইডির নোটিশ পেয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে টুইটারে লিখেছেন, ইডির সঙ্গে পুতুল খেলার বদলে বাংলার শাসন ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নিন।  

প্রসঙ্গত, ভারতের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’(এনসিআরবি)-র একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে টানা দু’বছর ধরে কলকাতা ‘নিরাপদ শহর’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এনসিআরবি-র সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) অমিত শাহকে বিঁধছেন অভিষেক।

তৃণমূল সংসদ সদস্য অভিষেক টুইটে লিখেছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে দু’টি কাজ রয়েছে। বাড়িতে ছেলেকে জাতীয়তাবাদ শেখানো ও তার মন্ত্রকের অধীনে পুলিশকে সাজানো। দিল্লিতে অপরাধের হার আমাদের হতবাক করেছে। ইডির সঙ্গে পুতুল খেলার বদলে বাংলার শাসন ব্যবস্থা থেকে ওনার শিক্ষা নেওয়া উচিত।

মূলত, রোববার (২৮ আগস্ট) এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, শাহের ছেলে তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহের পাশে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি তাঁর দিকে জাতীয় পতাকা বাড়িয়ে দেন। কিন্তু পতাকাটি হাতে নেবেন না, এটা বোঝাতে মাথা নাড়িয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। ওই ভাইরাল ভিডিওকে হাতিয়ার করে আসরে নামেন অভিষেক। প্রথমে ওদিন রাতেই টুইটে এ নিয়ে শাহের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

এরপর সোমবার(২৯ আগস্ট) তৃণমুলের ছাত্রদিবস কর্মসূচিতে অভিষেক বলেন, আপনারা দেখেছেন, এশিয়া কাপে ভারত জেতার পরে অমিত শাহ, যিনি সারা ভারতবর্ষকে দেশপ্রেম শেখান, সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে বলছেন, ভারতের পতাকা আমি হাতে ধরব না! আমি অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি নিজেকে ভাবেন কী? দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের রক্ষাকর্তা? ধারক ও বাহক? আপনার হৃদয়, বিবেক, মস্তিষ্কে যদি ভারতের প্রতি ন্যূনতম সম্মান থাকে, তা হলে আপনি হয় আপনার ছেলেকে ত্যাজ্য করবেন, নইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।

এর আগে তৃণমূলের বড় সভা হয়েছে গত ২১ জুলাই। তারপর দিনই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ২১ জুলাই আমাদের সমাবেশ হল। ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ইডিকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। ২২ জুলাই কেন? কেন ২৩ জুলাই নয়? কেন ২৪ জুলাই নয়?  তারপর প্রায় নিশ্চিত সুরে অভিষেক বলেছিলেন, আপনারা লিখে রাখুন, চার/পাঁচ দিনের মধ্যে ওরা আবার কিছু একটা করবে।

এরপরই মঙ্গলবার অভিষেককে নোটিশ পাঠিয়েছে ইডি। যদিও ইডির তরফে বলা হয়েছে কে, কবে জনসভা করবে তার ভিত্তি করে নোটিশ তৈরি হয় না। নোটিশ তৈরি হয়েছে ২৮ আগস্ট। পাঠানো হয়েছে ৩০ আগস্ট।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
ভিএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।