নয়াদিল্লি: ভারতের রেল বাজেটে বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য রেলপথ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী।
জীবনে প্রথমবার লোকসভায় রেল বাজেট পেশ শুরু করেন দীনেশ ত্রিবেদী।
বুধবার রেল ভবনে যাওয়ার আগে রেলমন্ত্রী আরো বলেন, এবারের রেল বাজেটে সাধারণ মানুষের ভালো হবে। দেশজুড়ে রেলের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অগ্রগতি হবে দেশেরও। এটি স্বল্পমেয়াদী সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ বনাম রেলের সংস্কারমুখী দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যপূরণের বাজেট।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেদিন রেলমন্ত্রণালয়ের ভার নিয়েছিলাম, সেদিনই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এখন জটিল পরিস্থিতির মুখ দাঁড়িয়ে রেল। রেলের জন্য আর্থিক বরাদ্দ দরকার। আমি রেলকে দেশের সবচেয়ে নিরাপদ পরিবহন মাধ্যমে পরিণত করতে চাই। ইউরোপে অনেক জোর ছোটে ট্রেন। আমাদের ওদের কাছ থেকে শিখতে হবে। ’
তিনি বাজেট প্রস্তাবে বলেন, ‘অর্থ সমস্যা আছে। যৌথভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে।
এবারের ভারতের রেল বাজেটে কাকোদকর কমিটির সুরক্ষা-সুপারিশ কার্যকর, স্বশাসিত রেলওয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল তৈরি, স্বশাসিত নিরাপত্তা সংস্থা তৈরি, আগামী ৫ বছরের মধ্যে সব প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং বন্ধ, দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে ২.৫ লাখ কোটি রুপি বাজেট সহায়তা, নৈহাটিতে নতুন কোচ টার্মিনাল নির্মাণ, রেলের সেবা বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ, ১৯ কিমি লাইনের আধুনিকীকরণ, মধ্যপ্রদেশে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে।
রেলের উন্নয়নই দেশের উন্নয়ন বলে অভিহিত করে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলব্রিজের মানোন্নয়নে জোর দেওয়া হবে।
রেল স্টেশনে ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
তিনি রেলওয়ের বিশেষ প্রকল্পে ৪ হাজার কোটি রুপি প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, ১১৪টি নতুন লাইনের সমীক্ষার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে যোজনা কমিশনে। এ বছর ৭২৫ কিমি নতুন লাইন পাতা সম্ভব।
ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতিতে ১ হাজার ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ এবং মেট্রো পরিষেবা সম্প্রসারণের প্রস্তাবও করেন
দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি পিছিয়ে পড়া এলাকায় অধিকাংশ প্রকল্প বকেয়ার কাজ শেষ করা, রেলের অপারেশন রেশিও এক বছরে ৯৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮৪.৯ শতাংশ করা,
২১টি নতুন প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু, ৭৫টি নতুন দূরপাল্লার ট্রেন চালুসহ চলতি অর্থবর্ষে ১ লাখ নতুন কর্মী নিয়োগের প্রস্তাব করেন রেল বাজেটে।
ওয়েটিং লিস্টের যাত্রীদের জন্য অন্য ট্রেনে জায়গা, বাজেটে ৬০১০০ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব এবং রেলওয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল গঠনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।
এবারের রেল বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য যেসব প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: টালিগঞ্জ থেকে জোকা পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণ, লুধিয়ানা থেকে ডানকুনি ফ্রেট করিডর নির্মাণ, ব্যারাকপুর থেকে কল্যাণী পর্যন্ত ও জোকা থেকে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু, ২১টি নতুন প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু, ৭৫টি নতুন দূরপাল্লার ট্রেন চালু, খড়গপুরে রেলের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ ইত্যাদি। এছাড়া নৈহাটিতে রেল মন্তণালয় তৈরি করবে বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মরণে সংগ্রহশালা।
এদিন রেলমন্ত্রী বিভিন্ন পর্যায়ে কিলোমিটার প্রতি ২ পয়সা থেকে ৩০ পয়সা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১০ বছর পর ভারতীয় রেলের ভাড়া বাড়লো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১২