নয়াদিল্লি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রক উড়িয়ে দিলেও সেনা-তৎপরতা সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর খবরের সত্যতায় অটল ইংরেজি দৈনিক `দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস`।
বুধবার গোটা ভারতজুড়ে ঝড় তুলে দেওয়া `দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস` দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়ে দিয়েছে, গত ১৬/১৭ জানুয়ারির ওই ঘটনা সত্যিই ঘটেছিল।
তারা বলেছে, সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীর উঁচুতলার বিভিন্ন সূত্রেই ওই খবর সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের অনেকেই ওই ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই ওই সব সূত্রের নাম গোপন রাখা হয়েছে।
বুধবার প্রকাশিত খবরটিতে সংবাদপত্রটি দাবি করে, গত ১৬ জানুয়ারি ভোররাতে ভারতীয় সেনার দু’টি ডিভিশন সরকার ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে রাজধানী নয়াদিল্লি অভিমুখে দিকে মার্চ করেছিল!
সেদিন ভোররাতে হরিয়ানার হিসার থেকে সেনার উচ্চপ্রশিক্ষিত মেকানাইজড ইনফ্যানট্রি ইউনিট রাজধানীর উদ্দেশ্যে এগোতে থাকে। অন্যদিকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আগ্রাস্থিত ১৫ প্যারা ব্রিগেড।
শেষ পর্যন্ত রাজধানীর দিকে আগুয়ান ওই দুটি ডিভিশনকেই থামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তোলপাড় শুরু হয় রাইসিনা হিলের রাষ্ট্রপতিভবনে।
ওই পরিকল্পনা বা মহড়া সম্পর্কে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে একেবারেই অন্ধকারে রেখেছিল সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য, সেদিন অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি সকালেই বয়স বিতর্কের সমাধান চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সেনাপ্রধান। আগেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিষয়টিকে আষাঢ়ে গল্প বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
প্রতিরক্ষাসচিব শশীকান্ত শর্মাও এই খবরকে ফালতু বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার কথায়, ওটা রুটিন মহড়াই ছিল।
মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এই রেজিমেন্টের গোড়াপত্তন। পদাতিক বাহিনীকে গতি দিতেই ওই রেজিমেন্ট গড়া হয়েছিল।
সাবেক সেনাপ্রধান কে সুন্দরজির মস্তিষ্কপ্রসূত ওই রেজিমেন্ট শ্রীলঙ্কায় অপারেশন পবন, পঞ্জাবে অপারেশন রক্ষক এবং জম্মু-কাশ্মীরে অপারেশন বিজয়-এ (কারগিল যুদ্ধ) যোগ দিয়েছে। জাতিসংঘের হয়ে শান্তিরক্ষার কাজেও সোমালিয়া, অ্যাঙ্গোলা ও সিয়েরা লিওনে বিশেষ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।
প্যারা ব্রিগেড
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এলিট ভলান্টিয়ার ফোর্স। এই ব্যাটালিয়নের সদস্যরা শুধু শারীরিকভাবেই দুর্ধর্ষ নন, মানসিকভাবেও দারুণ ফিট। নির্দিষ্ট ক্লিনিক্লাল অপারেশনে ব্যবহৃত হয় এই বাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রধান এয়ারবোর্ন রেজিমেন্ট। বাছাই করে তরুণদের এই বাহিনীতে নেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে এই বাহিনী পূর্ব-পশ্চিমের রণাঙ্গনে দুরন্ত প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিল। সেনার যে কোনো শাখার অফিসারই নির্দিষ্ট শর্তপূরণ করলে এই রেজিমেন্টে স্বেচ্ছায় যোগ দিতে পারেন।
কারগিল যুদ্ধেও সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে এই রেজিমেন্ট। মোট ১১টি নিয়মিত, একটি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এবং ২টি টেরিটোরিয়াল আর্মি ব্যাটালিয়নও রয়েছে এই রেজিমেন্টে। রয়েছে ৭টি কমান্ডো প্রশিক্ষণ নেওয়া ব্যাটালিয়ন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১২
আরডি
সম্পাদনা : ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম এডিটর;
জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর।