ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

শাসক জোটের ৬৯ বিধায়কের নামে মামলা রয়েছে

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১২

কলকাতা : তৃণমূলের নির্বাচিত ১৮৪ জন বিধায়কের মধ্যে ৬৯ জনের বিরুদ্ধেই চলছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা, শতাংশের বিচারে তা ৩৮শতাংশ।

রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ১২৬৩ জন প্রার্থীর হলফনামা পর্যবেক্ষণ করেই এমন রিপোর্ট তৈরি করেছে একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা।



এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, বর্তমান বিধানসভায় ৩৫ শতাংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা চলছে।

এ রাজ্যে অভিযুক্ত বিধায়কদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থীরাই। শুধু তৃণমূলের নির্বাচিত ১৮৪ জন বিধায়কের মধ্যে ৬৯ জন বিধায়কের বিরুদ্ধেই চলছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা, শতাংশের বিচারে ৩৮শতাংশ।

অভিযুক্তদের অন্যতম তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬২টি ধারায় ১৪টি মামলা রয়েছে। আছে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গুরুতর মামলাও।

১৯৯০ সালে পুলিশ অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভারতীয় ফৌজদারির ১৪৭, ১৪৮, ৩২৫ ধারায়। আবার ২০০০ সালে এই একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় মামরা হয় ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৪/৩৫৩ ধারায় এবং অস্ত্রআইন ২৫/২৭ ধারায়। বীজপুর থানাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

২০০৮ ও ২০১০ সালে রয়েছে নৈহাটি থানায় একাধিক মামলা। এছাড়া টিটাগড় এবং পিন্ড্রজোড়া থানায় তোলা আদায়ের অভিযোগে অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি বিধির ৩৮৪ ধারায় মামলা রয়েছে। তবুও পুলিশ তার ‘ট্রেস’ পাচ্ছে না।

বর্ধমানের কেতুগ্রাম থেকে তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ সাওনয়াজ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৪টি গুরুতর ধারায় অপরাধের অভিযোগ। রয়েছে দুটি খুনের মামলা (৩০২) এবং তিনটি খুনের চেষ্টার মামলা (৩০৭)।

সিঙ্গুরের আন্দোলনের নেতা তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্নার বিরুদ্ধে আই পি সি-র ১৩টি গুরুতর ধারায় অভিযোগ রয়েছে । এমনকি ৮টি খুনের চেষ্টার মামলাও রয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার তৃণমূল বিধায়ক সমীর জানা। তার বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় দু’টি মামলাসহ আইপিসির ২৬টি ধারায় ৪টি মামলা রয়েছে।

আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টাসহ আইপিসির ৩২টি ধারায় ৬টি মামলা রয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার বিধাননগরের তৃণমূলী বিধায়ক সুজিত বসুর বিরুদ্ধে রয়েছে ৩০৭ নম্বর ধারায় খুনের চেষ্টাসহ ভারতীয় দণ্ডবিধির সাতটি ধারায় ১টি মামলা। প্রায় প্রতিটি জেলাতেই তৃণমূলী বিধায়কদের বিরুদ্ধে রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ।

নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদেরই দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভার যে ৯জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ তারা হলেন— মলয় ঘটক (আইন ও বিচার বিভাগ) ফিরহাদ হাকিম (পৌর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর), রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য (কৃষি দপ্তর), সুব্রত মুখার্জি (পঞ্চায়েত), জাভেদ আহমেদ খান (দমকল, অসামরিক প্রতিরক্ষা ও বিপর্যয় মোকাবিলা), শ্যামাপদ মুখার্জি (শিশু কল্যাণ), মদন মিত্র (ক্রীড়া দপ্তর), শান্তিরাম মাহাতো (স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর), আব্দুল করিম চৌধুরী (জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার)।

আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন তৃণমূলের মলয় ঘটক। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৬টি মামলা। খুনের চেষ্টা, দাঙ্গা বাঁধানো, অস্ত্র রাখাসহ ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) অনুয়ায়ী ৬টি গুরুতর ধারা এবং অন্যান্য ২৪টি ধারায় অভিযোগ রয়েছে।

কলকাতা বন্দর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী হওয়া ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে ৩টি গুরুতর অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে।

সিঙ্গুর থেকে নির্বাচিত হয়ে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী হওয়া রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা। আইপিসি ধারায় গুরুতর এবং সাধারণ মিলিয়ে মোট ১৫টি অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বালিগঞ্জের বিধায়ক ও মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির বিরুদ্ধে রয়েছে আইপিসির ৩২৫,৩৪১,৫০০,৫০১,৩৪ নম্বর ধারায় ২টি মামলা। কসবার বিধায়ক ও মন্ত্রী জাভেদ খানের বিরুদ্ধে রয়েছে আইপিসির মোট ৯টি ধারায় অভিযোগ, চলছে ২টি মামলা।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে মন্ত্রী হওয়া তৃণমূল নেতা শ্যামাপদ মুখার্জির বিরুদ্ধে রয়েছে একটি মামলা, আইপিসি ধারায় আটটি অপরাধের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ।

উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি থেকে জিতে ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়া মদন মিত্রের বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি মামলা, আইপিসির ১০টি ধারায় অভিযোগ।

পুরুলিয়ার বলরামপুর থেকে জেতা স্বনির্ভর গোষ্ঠী দপ্তরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহতোর বিরুদ্ধে রয়েছে ১টি মামলা।

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে জেতা আবদুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে সর্বাধিক ৭টি ফৌজদারি মামলা। রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৩টি ধারায় একাধিক অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ।

বিধানসভার সহকারী স্পিকার সোনালি গুহের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক অভিযোগ।

বাংলাদেশ সময় : ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১২

আরডি
সম্পাদনা : আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।