ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাওনা ৩৫ কোটি, জয়পুরহাটে চামড়া কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
পাওনা ৩৫ কোটি, জয়পুরহাটে চামড়া কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

জয়পুরহাট: প্রতি বছর কোরবানির ঈদে জয়পুরহাটের আড়তগুলো থেকে কয়েক কোটি টাকার পশুর চামড়া ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এবার এ জেলার চামড়ার আড়তগুলোতে নেই কোনো প্রস্তুতি।

 

কারণ, ট্যানারি মালিকদের প্রায় ৩৫ কোটি টাকার চামড়া বাকিতে দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক চামড়া ব্যবসায়ী। এ অবস্থায় চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপ।

জানা গেছে, জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগর, আমতলী, পাঁচবিবি উপজেলার রেলগেট, আক্কেলপুর উপজেলার হাজিপাড়া চামড়ার আড়তগুলোতে প্রতি বছরের মতো এবার নেই কোনো প্রস্তুতি।  

এসব আড়তের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছরের ৩৫ কোটির বেশি পাওনা টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারেননি ট্যানারি মালিকরা।

সেই সঙ্গে চামড়ার প্রধান কাঁচামাল লবণের দাম এবং শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে নতুন চামড়া কিনতে পুঁজি সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বকেয়া টাকা পরিশোধে ট্যানারি মালিকরা যেন উদ্যোগ নেন ও সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোও যেন সহজ শর্তে ঋণ দেয়, সেজন্য সরকারের সুদৃষ্টিও কামনা করেন তারা।

জয়পুরহাটের চামড়া ব্যবসায়ী শাহিন আকতার জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা আড়তগুলো প্রতিবছরের মতো এবার ধোয়া মোছা করছেন না। গতবারের চামড়ার টাকা এখনো ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা রয়েছে। চামড়ার বাজারে মন্দাভাব বিরাজ করায় কয়েক বছর ধরে তারা লাভের মুখ দেখতে পারেননি।

একদিকে লোকসান, অন্যদিকে বকেয়া, এভাবে তাদের মূলধন শেষ। এদিকে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে ঋণ দিচ্ছে না। ফলে আসন্ন ঈদে নতুন করে চামড়া কেনা মুশকিল হয়ে পড়বে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

অন্য এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে জানান, ট্যানারি মালিকরা সব সময় সিন্ডিকেট করে চামড়া কেনেন এবং দাম পরিশোধের বেলাতেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অল্প করে টাকা দেন, যা দিয়ে তারা ব্যবসা চালাতে পারেন না।

কোরবানির আগেই পুঁজি সরবরাহ করে চামড়া শিল্পকে সচল রাখবেন ট্যানারি মালিকেরা- এমন আশা ব্যক্ত করে জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামিম আহমেদ জানান, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি চামড়া শিল্পের প্রসারে কাঁচামাল লবণের দাম স্থিতিশীল রাখা, চামড়া পাচার রোধ ও বকেয়া টাকা পরিশোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই এ শিল্প টিকে থাকবে।

তিনি বলেন, লবণ কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলতে না পারলে, আগামী কোরবানির ঈদে চামড়া কিনতে না পারায় জয়পুরহাটের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভারতে পাচারের শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।