ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চলতি মাসে টিসিবির কোনো পণ্যই পাবে না ৩৭ লাখ কার্ডধারী 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৫
চলতি মাসে টিসিবির কোনো পণ্যই পাবে না ৩৭ লাখ কার্ডধারী 

ঢাকা: চলতি মাসে হঠাৎ করেই ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডের পণ্য তালিকা থেকে চাল বিক্রি বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে।

সেইসঙ্গে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবার।

খাদ্য অধিদফতর থেকে চাল সরবরাহ না করায় এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যুগ্ম-পরিচালক (অফিস প্রধান) হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ‘খাদ্য অধিদফতর ডিসেম্বর পর্যন্ত চাল সরবরাহ করেছে। জানুয়ারিতে চাল সরবরাহ না পাওয়ায় এ মাসে চাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা খাদ্য অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। চাল পাওয়া গেলে পুনরায় সরবরাহ শুরু হবে। ’

অর্থ মন্ত্রণালয় চাল কেনার জন্য বাজেট ছাড় না করায় খাদ্য অধিদফতর চাল সরবরাহ করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

খাদ্য অধিদফতরের সরবরাহ, বণ্টন ও বিতরণ বিভাগের পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, এটা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে সেভাবেই বাস্তবায়ন করা হয়। নির্দেশনা আসেনি, তাই সরবরাহ করা হয়নি।

টিসিবি সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নির্দেশনায় নিম্ন আয়ের এক কোটি উপকারভোগী কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য চাল, মসুর ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি করে আসছিল টিসিবি। ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে টিসিবি প্রতি ফ্যামিলি কার্ডের বিপরীতে ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল সরবরাহ করে আসছিল। খাদ্য অধিদফতর এ চাল সরবরাহ করত।

এদিকে টিসিবির বিশেষ কর্মসূচি ট্রাকসেলও বন্ধ হয়ে গেছে। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রাকসেলে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। এখন তা বন্ধ রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে পুনরায় তা চালু হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, খাদ্য অধিদফতর প্রতি মাসে টিসিবিকে ৫০ হাজার টন চাল সরবরাহ করে। তবে এ বরাদ্দের জন্য খাদ্য অধিদফতর বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। ফলে খাদ্য অধিদফতর আর চাল সরবরাহ করতে পারছে না। চালের মূল্য পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় সরবরাহ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, চাল বিক্রি বন্ধ থাকলেও ভোজ্য তেল ও ডাল সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলতি মাসে এক কোটি উপকারভোগীর কাছে তিন পণ্য - চিনি, সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল বিক্রি শুরু করবে টিসিবি। তবে হাতে লেখা কার্ড পরিবর্তন করে স্মার্টকার্ড চালুর কারণে জানুয়ারি মাসে অন্তত ৩৭ লাখ কার্ডধারী টিসিবির কোনো পণ্যই পাবে না।

গত মঙ্গলবার টিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে কার্ডধারীরা দুই লিটার ভোজ্য তেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং এক কেজি চিনি কিনতে পারছে।

সূত্রটি আরও জানায়, চাহিদা মেটাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় খোলাবাজারে বিক্রির জন্য এক হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা এবং চাল আমদানির জন্য তিন হাজার ৩৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে মোটা চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি তিন-চার টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৫৪-৫৫ টাকা।

টিসিবি জানায়, বর্তমানে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ভোজ্য তেল, ডাল, চিনি নিয়মিত থাকে। পাশাপাশি কখনও কখনও পেঁয়াজ ও চাল সরবরাহ করা হয়। রমজান মাসে যোগ হয় ছোলা ও খেজুর। এতদিন ফ্যামিলি কার্ড হাতে লেখা ছিল। সরকার বর্তমানে স্মার্ট ডিজিটাল কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত ৫৭ লাখ গ্রাহক স্মার্টকার্ড পেয়েছেন। আরও ছয় লাখ কার্ড প্রস্তুত হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই এগুলো গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে যাবে।  

সূত্র: আমার দেশ 

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৫
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।