ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

অভিযুক্তদের সিট বাতিলের পর যা বললেন ফুলপরী

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
অভিযুক্তদের সিট বাতিলের পর যা বললেন ফুলপরী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তের সিট বাতিল করেছে হল প্রশাসন।  

অভিযুক্ত পাঁচজন হলেন: শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মাওয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন ঊর্মি।

পাঁচ অভিযুক্তের সিট বাতিলের খবর শুনে ভুক্তভোগী তার মন্তব্যে বলেন তারা ‘তাদের কৃতকর্মের প্রাপ্যতা পেতে শুরু করেছে। ’

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল চারটায় অভিযুক্তদের আবাসিক হলের সিট বাতিলের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফুলপরী এ প্রক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তে আমার সন্তোষ-অসন্তোষের কোনো বিষয় নেই। তাদের যেটা প্রাপ্য সেটা তারা পাওয়া শুরু করেছে। আরও প্রাপ্য থেকে থাকলে সেটাও পাবে। তারা এ যোগ্যতাই অর্জন করেছে। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী তারা প্রাপ্য পাবে।

জানা যায়, হল প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার পর এক জরুরি সভায় অভিযুক্ত ওই জনের হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় হল কর্তৃপক্ষ। ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে ১ মার্চ দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হল সংযুক্তি বাতিলের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়।

সভায়  উপস্থিত ছিলেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহসানুল হক, সদস্য ইসরাত জাহান, মৌমিতা আকতার, নুরুল ইসলাম ও আসমা সাদিয়া রুনা।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে আমরা দুপুর ১২টায় মিটিং করি। প্রতিবেদনে অভিযুক্তের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই আমরা তাদের আবাসিক হলের সিট বাতিল করেছি। এছাড়াও হলের সংযুক্তি বাতিলেরও সুপারিশ করা হবে।

জানা যায়, নির্যাতনের ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি এক আইনজীবীর করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের যৌথ বেঞ্চ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।  

একই সঙ্গে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এদিকে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন বলে নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির এক সদস্য। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি।

এখন পর্যন্ত চারটি তদন্ত কমিটির প্রতিটিতেই নির্যাতনের সত্যতা উঠে আসছে। পাশাপাশি নির্যাতনের সময় ভিডিও করা হয়েছিলও বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।  

প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। র‌্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত দেন তিনি।  

বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ক্যাম্পাস ছাড়েন অভিযুক্তরা।   

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।