ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সাদা দলের এক বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এতথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির বিষয়ে আমরা ভিন্নমত পোষণ করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র চর্চার সূতিকাগার ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার লালন কেন্দ্র। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি, পাকিস্তানি অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক, এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশক্তির বিরুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা আমরা সবাই জানি। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে, যার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস ও মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে।
এতে বলা হয়, আগামী নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের হটকারী সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রশ্নে নতুন ভিসানীতি গ্রহণ এবং এর প্রয়োগ শুরু করায় বাংলাদেশ একটি দীর্ঘস্থায়ী সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থানও বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিকর নয়। এমতাবস্থায় বর্তমান সরকারের অগণতান্ত্রিক, স্বৈর ও কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা আবারো একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের অপ্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এবং সরকারের পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক মানুষ এখন সর্বাত্মক আন্দোলন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস এবং মানুষের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার হরণকারী সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। এর প্রতিবাদ হিসেবে সাদা দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আসন্ন বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা আশা করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক সমাজ আমাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়ে আসন্ন সমাবর্তন বর্জন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৩
আরবি