ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিএনপি-জামায়াত ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের ডাকা অবরোধে মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু রয়েছে। যদিও অবরোধে ক্যাম্পাসে যাতায়াত নিয়ে নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, অবরোধের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। অবরোধকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোতে হামলা করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একটি বাসে ইতোমধ্যে তারা ইট-পাটকেল মেরেছে। হলের বাইরে থেকে এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ান আল হাসান বলেন, আমরা যেহেতু হলে থাকি না তাই যানবাহন ব্যবহার করে আমাদের ক্যাম্পাসে যেতে হয়। হেঁটে গেলেও একটি ভয় থাকে, রাস্তা-ঘাটে মিছিল-অবরোধের মাঝখানে পড়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে। ফলে অবরোধের সময় বাইরে থাকা অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ান উল্লাহ মুহসিন বলেন, নিরাপত্তাহীনতা আসলেই রয়েছে। কিন্তু তা আমরা এখনো পরিমাপ করতে পারছি না। একজন শিক্ষার্থীও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সেক্ষেত্রে যারা হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাসগুলো হরতালের আওতামুক্ত রাখার ব্যাপারে সমঝোতায় আসা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে অনলাইনেও ক্লাস নিতে পারে।
অবরোধের সময় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো কোনো বিভাগ বা কোর্স শিক্ষক পরীক্ষা স্থগিত করলেও কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
অবরোধের সময় ক্লাস ও পরীক্ষা চালু থাকবে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর থেকে নানা সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়নি। বিভাগগুলোতে ক্লাস, ইনকোর্স, মিডটার্ম পরীক্ষা চালু রাখার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
তিনি বলেন, কোনো কোনো বিভাগ হয়তো নিজ উদ্যোগে ক্লাস-পরীক্ষা পিছিয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন কোনো নির্দেশনা নেই।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে হরতাল-ধর্মঘটের মধ্যেও আমরা ক্লাস নিয়েছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই সেশনজটে না পড়ে। কেউ আমাদের ওপর হামলা করবে এই শঙ্কায় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিলে আমরা একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারবো না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন সহানুভূতিশীল হন। তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বা শিক্ষার্থীদের টার্গেট না করেন।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের সমাবেশের পর ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকা হয়। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিন বা ৭২ ঘণ্টার অবরোধে ডেকেছে তারা। বুধবার অবরোধের দ্বিতীয় দিন চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২৩
ফাহিম হোসেন/এইচএ/