খুলনা: নানা আয়োজনে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সমাবেশ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, সেমিনার, কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, ধ্বনি বিস্তার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের সম্মেলনকক্ষে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ বেতার’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেতার একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শ্রোতাদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে শিক্ষা, তথ্য ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ জনপদের মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানসমূহ তরঙ্গ সম্প্রচারের পাশাপাশি অনলাইন প্রচারেও সর্বোচ্চ পেশাগত মান বজায় রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেতারের আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ বর্তমান সরকার ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক নিতাই কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) সরোজ কুমার নাথ, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম ও খুলনা বেতারের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বেতারের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুর রহমান।
এতে আলোচক ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. কাজী মাসুদুল আলম, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান ও খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম।
মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির, অধ্যাপক মো: সিরাজুল ইসলাম, টিটিসির সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিবুল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
মুক্ত সেমিনারে অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশ বেতার দেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ গণমাধ্যম। অ্যাপের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সীমানা পেরিয়ে সারা পৃথিবী থেকে এখন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্র থেকে তাদের অনুষ্ঠান শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সমস্যা সমাধানে এবং সম্ভাবনার পথ খুলে দেওয়ার জন্য অন্যতম একটি কেন্দ্র হলো বাংলাদেশ বেতার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেই লক্ষ্যেই সারা দেশের মতো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের নানাবিধ কর্মসূচির সঠিক তথ্য তুলে ধরে উন্নত দেশের রূপরেখা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বেতার অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
সেমিনারে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শিল্পী-কলাকুশলীরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সন্ধ্যায় বেতারের শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
এর আগে মেয়রের নেতৃত্বে খুলনা বেতার প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিল্পী, কলাকুশলীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্র ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর নগরীর গল্লামারী এলাকায় যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩
এমআরএম/আরবি