ঢাকা, সোমবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ সঙ্কট চিহ্নিত করেছে ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৯
বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ সঙ্কট চিহ্নিত করেছে ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): সরকারি কর্তৃত্ব, স্বায়ত্তশাসনের অপব্যবহারসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আটটি সঙ্কট চিহ্নিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। 

শনিবার (৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সঙ্কট তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি এসব সঙ্কট নিরসনে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবও দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই সংগঠনটি।

 

গত ১১-১২ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই: উচ্চশিক্ষা, নীতিমালা, কাঠামো’ শীর্ষক কনভেনশনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।  

এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

সামিনা লুৎফা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক মানের অবনমন ঘটেছে বলে একটি ধারণা ধীরে ধীরে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় রাজনীতি শিক্ষাগতমানের উপরে প্রভুত্ব করছে। অল্প কয়েকটি বাদ দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবল সনদ বিক্রির ভবনে পরিণত হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালযগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কনভেনশনের আয়োজন করে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি কর্তৃত্ব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কৌশলপত্রের কারণে সান্ধ্যকোর্স, বৈকালিক কোর্স, বিশেষ প্রোগাম চালু; স্বায়ত্তশাসনের অপব্যবহার, শিক্ষায় জিডিপির তুলনায় কম বরাদ্দ ও গবেষণায় তহবিল বরাদ্দ না থাকা; অ-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত, শিক্ষক নিয়োগে দলীয় বিবেচনায় ভোটার বৃদ্ধির প্রবণতা, ছাত্ররাজনীতির নামে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ ও মুনাফামুখী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কারণে মান অর্জনে ব্যর্থসহ সমস্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে এ সব সঙ্কট সমাধানে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। এক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্র কর্তৃক সমাধান, ইউসিজির কৌশলপত্রে পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আইনের সংস্কার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যদূরীকরণ, পাঠদান ও গবেষণায় জবাবদিহিতার ব্যবস্থা, ভর্তি ও নিয়োগে পরিবর্তনের কথা বলেন।

অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, দলগত ও আঞ্চলিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগে পাস করা শিক্ষার্থীদের ওই বিভাগে চাকরি দেবার প্রবণতা বদলাতে হবে।  

এ সময় তিনি ইউসিজির চলমান কৌশলপত্রের বিপরীতে পাল্টা কৌশলপত্র প্রণয়ন ও ১৯৭৩ এর আদেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে, তার আলোকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন ও জ্ঞানমুখী পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৯
এসকেবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।