ঢাকা, সোমবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গৌরব-ঐতিহ্যের ৬৬ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৯
গৌরব-ঐতিহ্যের ৬৬ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রং-বেরঙের আলোকসজ্জায় জ্বলজ্বল করছে রাবি ক্যাম্পাস। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ৬ জুলাই। নানান চড়াই-উৎরাই ও আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৬৬ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে শনিবার (৬ জুলাই)। পেছনে রয়েছে সোনালি অতীত। 

১৯৫৩ সালে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি বিজড়িত দেশের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠের রয়েছে গৌরব-ঐতিহ্যের সুদীর্ঘ ইতিহাস।

ব্রিটিশ আমলে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। এই কলেজে আইন বিভাগসহ পোস্ট গ্রাজুয়েশন শ্রেণি চালু করা হলেও কিছুদিন পরেই সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।  

তখনই রাজশাহীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজন অনুভূত হয়। ১৯৪৭ সালের দিকে রাজশাহীতে স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়।  

১৯৫০ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা।

পরে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি ডেলিগেশন পাঠানো হয়। অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইন পাস হয়।  

নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার বখশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ণ করে। এরপর শুরু হয় রাবির পথচলা।

১৯৫৩ সালে রোপণ করা বীজটি বতর্মানে বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর।  

বর্তমানে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১২০৫ জন শিক্ষক ও ২০০০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ২৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন। বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিক ভবনসহ বর্তমানে রাবির ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মোট ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৬টি।

রং-বেরঙের আলোকসজ্জায় জ্বলজ্বল করছে রাবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজসুদীর্ঘ সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিয়ে অনেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রেখেছেন। দীর্ঘ এ সময়ে রাবি তৈরি করেছে ভাষা বিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, সেলিনা হোসেন, ইতিহাসবিদ আব্দুল করিম, তাত্ত্বিক ও সমালোচক বদরুদ্দীন উমর, চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম, নাট্যকার মলয় ভৌমিক, মাসুম রেজা ও জাতীয় ক্রিকেটার আল আমিন হোসেনদের মতো অসংখ্য গুণীজনকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিবলী ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৬৫ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশে যুগোপযোগী উচ্চশিক্ষা ও মৌলিক গবেষণা বিস্তারে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করে আসছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও প্রসারের মাধ্যমে আজ রাবি দেশ, জাতি ও সমাজকে আলোকিত করা ছাড়াও জাতির উন্নয়নে এক গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে এরই মধ্যে শোভা পাচ্ছে বর্ণিল আলোকসজ্জা।  

রং-বেরঙের আলোকসজ্জায় জ্বলজ্বল করছে ক্যাম্পাস। বিশেষত রাবির সিনেট ভবন, প্রশাসনিক ভবন, প্রধান ফটকজুড়ে আলোকসজ্জা সবার নজর কেড়েছে। শিক্ষার্থীরা রাতের ওই আলোতে ছবি তোলার জন্য ভিড় করছেন বিভিন্ন ভবনের সামনে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, এইদিন সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়ানোর মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এছাড়া বিকেল ৪টায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাড়ে ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৯
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।