ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিলেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিলেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা

ঢাকা: পরিচয় পাওয়ার পরও ঢাকা-১৭ আসনের একটি কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আদর্শ বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

 

নির্বাচন কমিশন বলেছে, সাংবাদিকদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে, এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মানিকদি এলাকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আদর্শ বিদ্যানিকেতনের ২য় তলা থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হয়।  

ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চারটি কেন্দ্র। বেলা পৌনে ১২টায় উত্তর পাশের দ্বিতীয়তলার পুরুষ কেন্দ্রে যান প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান। তিনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভোটকেন্দ্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তার হাতে মোবাইল ফোন ছিল। এ সময় ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সঞ্জয় চন্দ্র বাইরে আসেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে আসতে পারবেন না।  

সাংবাদিক মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে আসতে পারবেন না- এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের লিখিত নির্দেশনা দেখাতে বলেন সামছুর রহমান। এতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। সাংবাদিককে নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তার কক্ষে যান। তিনি মোবাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে কথা বলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সামছুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশে কোনো বাধা নেই। গোপনকক্ষ বাদে সব জায়গায় যেতে পারবেন।
 
এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে উপস্থিত হন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মিরাজ মাহবুব ইফতি, বাংলা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্টার জুবায়ের আহমেদ ও বার্তা২৪-এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রাকিব হাসান। তারা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে গেলে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।  

তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, বের হন আপনারা কেন্দ্র থেকে। এই মুহূর্তে বের হন।
 
সাংবাদিকদের এভাবে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হলে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, সাংবাদিকরা গোপনকক্ষ ছাড়া যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। এটি অন্যায় হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান বলেন, আমরা সবাই পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। সে সময় এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না বলে চোটপাট শুরু করেন। তখন আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কথা বলিয়ে দিই। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে গোপন কক্ষ বাদে সব জায়গায় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে বলে জানান। তবুও এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সঞ্জয় চন্দ্র বলেন, এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। উনি সাংবাদিক পরিচয় দেননি।  

এদিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে।  

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাননি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রসির (আরএফইডি) সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল বলেন, নির্বাচন কাভারেজে ইসির নতুন নীতিমালার কারণে সাম্প্রতিক ভোটগুলোতে সাংবাদিকদের নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সাংবাদিকদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি অভিযোগ আকারে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমাদের দাবি, বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেই সাথে অবিলম্বে ইসির নতুন নীতিমালা সংশোধনেরও দাবি জানাই আমরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
এমএমআই/ইএসএস/এসসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।