ঢাকা: নির্বাচন কমিশন সরকারের অঙ্গ সংগঠন কিনা, তা বিচার করবে দেশের জনগণ। এটা একটা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (১৭ জুলাই) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত তালিকায় রাখায় বিভিন্ন মহল থেকে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব বলেন।
নতুন দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশ কাজ করেছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মো. আলমগীর বলেন, অভিযোগ করতেই পারে। নির্বাচন কমিশন কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কথায় চলে না। কোনো গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে কাজও করে না। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে কেন্দ্রে একটি অফিস থাকতে হবে। বাইশটি জেলায় তাদের অফিস থাকতে হবে। ৬১ উপজেলায় তাদের অফিস থাকতে হবে। সেটা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। সেটার ওপর সেকেন্ড টাইম আরেকটা তদন্ত করা হয়েছে। দুটি কমিটির তদন্তে যেখানে মিলে গেছে, সেই হিসাবে এই দুটি পার্টির সেই শর্তগুলো পূরণ করতে পেরেছে। এজন্য তাদেরকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। বাকি যারা পারেনি তাদেরকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
নির্বাচন কমিশন সরকারের অঙ্গসংগঠন এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরও বলেন, এটা একটা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। গণতান্ত্রিক দেশে যেকোনো মানুষ, যেকোনো অভিযোগ করতে পারে, সেই অধিকার তাদের আছে। সেটা কতটুকু সত্য সেটা বিচার করবে এই দেশের জনগণ।
বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এ দুটি দলকে যাচাই-বাছাইয়ের পর রোববার (১৭ জুলাই) নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সোমবার (১৭ জুলাই) পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দল দুটিকে নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে আগামী ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বলেছে সংস্থাটি।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, কারও কোনো আপত্তি থাকলে শুনানির পর নিবন্ধনে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
এবার নিবন্ধন পেতে মোট ৯৩টি দল আবেদন করে। এদের মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ে টেকে ১২টি দল। এগুলো হচ্ছে- এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডি)।
ইসির এ সিদ্ধান্তের কারণে গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য এবং এবি পার্টির (আমার বাংলাদেশ পার্টি) মতো দলগুলোর নিবন্ধন পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। বর্তমানে আদালতে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো পথ নেই।
এদিকে নিবন্ধন তালিকা থেকে বাদ পড়ার পর রোববার এক প্রতিক্রিয়ায় গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নূরুল হক নুর বলেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পতন ঘটিয়েই আগামী নির্বাচনের আগে নিবন্ধনও নেব এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।
এদিকে প্রাথমিক বাছাই তালিকা থেকে বাদ পড়া ওই দশটি দল যুগপৎভাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪২টি। নিবন্ধন না পেলে কোনো দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
ইইউডি/এমজে