ঢাকা: আসন্ন চট্টগ্রাম-১০ আসনের (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) উপনির্বাচনে ১৬ থেকে ১৮ জনের ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাধারণ কেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর ১৬ জন এবং ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছেন।
বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার শূন্য আসনে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যথাযথ ভূমিকার ওপর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান বহুলাংশে নির্ভর করছে। সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ সততার সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই সরকারের নিরপেক্ষতা জনগণের নিকট দৃশ্যমান হবে।
সাধারণ কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশের তিন জন, আনসারের দুইজন সদস্য থাকবে। এছাড়া অস্ত্র ছাড়া লাঠি হাতে আনসারের থাকবে ১০ জন সদস্য এবং একজন গ্রাম পুলিশ সদস্যও থাকবে।
অন্যদিকে ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের একজন ও গ্রাম পুলিশের দু'জন অতিরিক্ত সদস্য থাকবে।
আবার পুলিশের আটটি মোবাইল টিম ও চারটি মোবাইল স্ট্রাইকিং টিম, র্যাবের চার টিম ও চার প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত থাকছে ভোটের এলাকায়।
নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ পরিচালনায় ১২ জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশের দায়িত্ব:
(ক) নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা বিধান হবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রধান কাজ।
(খ) নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সরঞ্জাম ও দলিল দস্তাবেজ আনা নেওয়াসহ সকল সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
(গ) নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
(ঘ) নির্বাচন কার্যালয়সমূহ, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান করা।
(ঙ) স্থানীয় জননিরাপত্তা, ভোটকেন্দ্রে ভোটারগণের সুশৃঙ্খল লাইন করানোসহ স্থানীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা।
(চ) ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
বিজিবি/আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব:
(ক) বিজিবি/আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
(খ) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/ রির্টার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে বিজিবি/আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
(খ) নির্বাচনী এলাকায় বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে।
(গ) রিটার্নিং অফিসার সহায়তা কামনা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে।
(ঘ) রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিশৃঙ্খলার রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে।
(ঙ) নির্বাচনকালীন নিয়োজিত বিজিবি সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিপোর্ট করবেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশ সুপার এর সাথে পরামর্শক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের চাহিদা মোতাবেক বিজিবি সদস্য ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান সদস্যদের নিয়োজিত করবেন। নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে ছাড়পত্র গ্রহণ করবে।
(চ) নির্বাচনী এলাকায়/নির্বাচনের জন্য হুমকিস্বরূপ কোনো ব্যক্তি/বস্তুর যাতায়াত/চলাফেরা ইত্যাদি আইন অনুযায়ী রোধ করবে।
র্যাপিড অ্রাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) দায়িত্ব:
(ক) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা রির্টানিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে র্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনি এলাকায় সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে।
(খ) রিটার্নিং অফিসার সহায়তা কামনা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে।
(গ) র্যাব আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবে এবং রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
আনসার ও ভিডিপি:
(ক) নির্বাচন কার্যক্রমে নিয়োজিত সদস্যগণ পুলিশ বাহিনী কর্তৃক নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
(খ) রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা:
স্ব স্ব বাহিনী তাদের যানবাহন ব্যবহার/নির্ধারণ করবে। তবে নির্বাচনী এলাকার ভোটকেন্দ্রে মোবাইল টিমসমূহ রিটার্নিং অফিসার অথবা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বেসামরিক যানবাহন অধিযাচনপূর্বক ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ স্ব স্ব বাহিনীর সদর দপ্তর নির্ধারণ করবে; স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয়পূর্বক আবাসন ব্যবস্থা নির্ধারণ করতে হবে; স্ব স্ব বাহিনীর সদর দপ্তর তাদের রেশন নির্ধারণ করবে; স্ব স্ব বাহিনী তাদের যানবাহন ব্যবহার/নির্ধারণ করবে অথবা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বেসামরিক যানবাহন অধিযাচনপূর্বক ব্যবহার করতে পারবে;
এই সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়ভার সামরিক/বেসামরিক যানবাহন/নৌযান জ্বালানি রক্ষণাবেক্ষণ ও ভাড়া ইত্যাদি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক বহন করা হবে।
নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী দীপক কুমার পালিত ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ‘রকেট’ প্রতীকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু ‘নৌকা’ প্রতীকে, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট-এর রশিদ মিয়া ‘ছড়ি’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে আসনটিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে চলছে প্রচার কাজ। এ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হবে। এছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ