ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিন হাজার নির্বাচনী প্রশিক্ষক তৈরি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে নিজস্ব কর্মকর্তা ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদেরও এ কর্মসূচির আওতায় আনবে সংস্থাটি।
ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী ২ সেপ্টেম্বর এই প্রশিক্ষক তৈরির কর্মশালা শুরু হবে, যা শেষ হবে ৩০ নভেম্বর। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ইসির উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে উপরের কর্মকর্তারা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও থাকবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, আগামী নভেম্বরের প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আর ভোটগ্রহণ করা হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে।
ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কাজে হাত দিয়েছে ইসি। আর আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ভোটকেন্দ্রের সংখ্যার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা) প্যানেল।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার ভোটার বাড়ায় ভোটকেন্দ্র যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সংখ্যাও। প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন।
এই লক্ষ্যে আগামী সেপ্টেম্বরেই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ-সূচি তৈরির কাজে হাত দেবে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)। আর মাঠ পর্যায়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন ওই নির্বাচনী প্রশিক্ষকরা।
ইটিআই মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে। প্রায় তিন মাসে তিন হাজার প্রশিক্ষক তৈরি করা হবে। প্রতি ব্যাচে ১০০ জন করে প্রশিক্ষণ নেবেন। দুদিনের এই কর্মসূচি হবে আবাসিক।
তিনি আরও বলেন, এখনো প্রশিক্ষণের বাজেট চূড়ান্ত হয়নি। কমিশনের কাছে প্রস্তাবনা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এক্ষেত্রে কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, তাই হবে।
প্রশিক্ষক তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সাংবাদিকদের জন্য উন্মুক্ত রাখার পরিকল্পনার কথাও জানান ইটিআই মহাপরিচালক। তিনি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে।
গত ১৬ আগস্ট ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। এবার ৪২ হাজার ৪০০টির মতো ভোটকেন্দ্র হতে পারে। আর ভোটকক্ষ হতে পারে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০টি।
নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা তথা প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে স্কুল-কলেজের শিক্ষক, ব্যাংকারসহ সরকারের অন্যান্য দপ্তরের মাঠ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কর্মকর্তাদের তালিকা নিয়ে তাদের নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োগ দেয় ইসি। আর ভোটের দায়িত্ব পালনকালে তারা ইসির কর্মকর্তা হিসেবেই ভূমিকা পালন করতে বাধ্য থাকেন।
সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসির আঞ্চলিক, সিনিয়র জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। তবে এবার রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদেরও নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
ইইউডি/আরএইচ