ঢাকা: নির্বাচনী প্রচারণায় প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধের পক্ষে থাকলেও তা প্রার্থীদের মানাতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে এবার আইন করে সেই পথ রোধ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংস্থাটি।
কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পোস্টারে, প্রচারণায় প্লাস্টিকের ব্যবহার না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা অধিকাংশ প্রার্থীই পালন করেননি। এক্ষেত্রে কুয়াশায় পোস্টার ভিজে ছিঁড়ে যাওয়াকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় বিষয়টি আইনে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার নেতৃত্বে আইন সংশোধনে গঠিত কমিটি এমন সুপারিশ করেছে। এক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ প্রথম নেওয়া হয়েছে। এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আচরণ বিধিমালায় সংশোধনের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারপত্র বা পোস্টার বা লিফলেটে থার্মাল লেমিলেমন ফিল্ম বা পলিথিনের আবরণ এবং প্লাস্টিক ব্যানার (পিভিসি ব্যানার) ব্যবহার বন্ধে বিধান আনতে হবে। এ নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় অনুরোধও করেছে নির্বাচন কমিশনকে।
নির্বাচনে প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে প্রথম উদ্যেগ নেয় কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশন। তবে সেই কমিশনও কোনো আইন না করে কেবল নির্দেশনার মধ্যে সীমিত ছিল।
কর্মকর্তারা বলছেন, বিধিমালায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হলে ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সহজেই প্রার্থীদের তা মানাতে বাধ্য করতে পারবেন। এতে পরিবেশ দূষণও কমবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটে অংশ নেওয়া সহজ করার কথা ভাবা হচ্ছে। বর্তমানে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করতে হলে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। বিধিমালায় সংশোধন এনে এটি তুলে দেওয়া প্রস্তাব করা হয়েছে। যুক্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি বলছে, এটি ‘গোপন ভোটের সংবিধান বিরোধী’ বিধান।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, আইন ও বিধি সংশোধন সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে আমাদের। সেই কমিটি বেশ কিছু প্রস্তাব এনেছে। কমিশনে অনুমোদন পেলে এগুলো সংশোধনী আকারে বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ বিষয়ে বলেন, বিধিমালায় কিছু কিছু জায়গায় অসংগতি আছে, কিছু অস্পষ্টতা আছে, সেগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তারা যে প্রস্তাব দেবে সবগুলোই যে গ্রহণ করব তাও নয়। এটা কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে ও চতুর্থ ধাপে ২৫ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ১৫৩টি, দ্বিতীয় ধাপে ১৬৫টি, তৃতীয় ধাপে ১১১টি ও চতুর্থ ধাপে ৫২টি; মোট ৪৮১টি উপজেলা ভোটের সময় ঘোষণা করেছে ইসি। দেশে বর্তমানে উপজেলা রয়েছে ৪৯৫টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
ইইউডি/এমজেএফ