ইতোমধ্যে এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৬টি কেন্দ্রে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, ব্যাটালিয়ন পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার ও আনসার-ভিডিপির হাজার খানেক সদস্য মোতায়েন থাকবেন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট বক্সসহ ভোটগ্রহণের ৪২ ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছেছেন ভোটগ্রহণের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এসব কেন্দ্রে শ’ খানেক প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পুলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্র সংখ্যা কম থাকায় বাইর থেকে আলাদা ফোর্স আনা লাগছে না। শুধু মহানগর পুলিশ, আমর্ড পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার, আনসার-ভিডিপির প্রায় সহস্রাধিক ফোর্স নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে ১৬টি কেন্দ্রের জন্য সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট ও চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটদের দু’জন স্থগিত হওয়া দু’টি কেন্দ্রে পুলিশের টিমের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন। এছাড়া বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সে চারজন ও র্যাবের ছয়টি টিমের একটির সঙ্গে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী) কেন্দ্রে ২ হাজার ১২১ ভোটার এবং হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছে।
এছাড়া সংরক্ষিত সাত নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো হলো- ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পূর্ব পাশের ভবন (পুরুষ) এবং উত্তর ও পশ্চিম পাশের ভবন (নারী), বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ), দর্জিপাড়া সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ (নারী), ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এমসি কলেজ টিলাগড় (পুরুষ ও নারী), দেবপাড়া নবীন চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উত্তর পাশের ভবন (পুরুষ কেন্দ্র) ও দক্ষিণ পাশের (নারী), সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় (নারী ও পুরুষ), ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী), কালাশীল চান্দুশাহ জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (পুরুষ ও নারী), সোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী), শিবগঞ্জ স্কলার্সহোম প্রিপারেটরি স্কুল (পুরুষ ও নারী)। এ ১৪টি কেন্দ্রে ৩৪ হাজার ১২৩ জন ভোটার ৯৭টি কক্ষে ভোট দেবেন।
এর মধ্যে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে চারটি কেন্দ্রে ৩২টি কক্ষে ১১ হাজার ৬২৬ জন ভোট দেবেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচটি কেন্দ্রে ৩১ কক্ষে ১০ হাজার ৫৬৪ জনের ভোটগ্রহণ করা হবে এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচটি কেন্দ্রে ৩৪টি কক্ষে ১১ হাজার ৯৩৩ জন ভোটার ভোট দেবেন।
গত ৩০ জুলাই নির্বাচনে বাস গাড়ি প্রতীকে ৪ হাজার ১৫৫ ভোট পান নাজনীন আক্তার কণা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নার্গিস সুলতানাও চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সমান সংখ্যক ভোট পান। যে কারণে তাদের মধ্যে পুনঃভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
৩০ জুলাই সিসিক নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির ঘোষিত ফলাফলে আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ফলাফলে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে থাকলে স্থগিত কেন্দ্র দু’টির ভোটের চেয়ে ১৬১ ভোট কম পেয়েছেন। স্থগিত কেন্দ্র দু’টির মোট ভোট ৪ হাজার ৭৮৭। যে কারণে গত ১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন স্থগিত কেন্দ্র দু’টিসহ ১৬ কেন্দ্রে ১১ আগস্ট পুনঃনির্বাচনের দিন ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
এনইউ/আরবি/