বিষয়টির কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, ভুল গোড়াতেই। নির্বাচন কমিশন থেকেই মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ভুলসহ আবেদন কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য।
অন্যদিকে অনেকের স্মার্টকার্ড ছাপা হচ্ছে অসম্পূর্ণ তথ্য নিয়ে। এ পেছনেও কারণ একই। নির্বাচন কমিশন থেকেই অসম্পূর্ণ তথ্য নিয়েই স্মার্টাকার্ড বিতরণের জন্য বলা হয়েছে।
ইসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রায় দুই বছর ধরে স্মার্টকার্ড বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে এখানো যেতে পারেনি ইসি। কেননা, লেমিনেটিং করা এনআইডির ভুল সংশোধনের জন্য অনেকেই আবেদন করেন। আর সেই আবেদন নিষ্পত্তি করে স্মার্টকার্ড উৎপাদনে যেতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। যে কারণে নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছেন, লেমিনেটিং কার্ড যেমন আছে তেমনই স্মার্টকার্ড ছাপাতে।
এদিকে আগে নাগরিকের সর্বনিম্ন ১৮টি তথ্য এনআইডি আবেদনের ফরমে না থাকলে স্মার্টাকার্ড প্রিন্ট হতো না। মেশিন এমনভাবেই প্রোগ্রামিং করা ছিল। কিন্তু তাড়াতাড়ি কার্ড ছাপানো ও বিতরণের জন্য সেই বার তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন আট-দশটি তথ্য নিয়েও ছাপা হয়ে যাচ্ছে উন্নতমানের এ জাতীয় পরিচয়পত্র।
এ অবস্থায় স্মার্টকার্ড সংশোধন বা তথ্য সন্নিবেশ করতে আবারও আবেদন করতে হবে অনেককে। এক্ষেত্রেও আবার ঝামেলা রয়েছে। কেননা, স্মার্টাকার্ড প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে ৯ কোটি ভোটারের জন্য। এক্ষেত্রে ৯ কোটি কার্ডই এখন ছাপানো হচ্ছে। তাই যে ব্যক্তি একবার স্মার্টকার্ড পেয়েছেন, তিনি সংশোধিত স্মার্টকার্ড পেতে আরো কয়েক বছর লেগে যাবে। কেননা, নয় কোটির বাইরে স্মার্টকার্ড ছাপাতে হলে নতুন করে অর্থের যোগান আনতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। যা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
২০১১ সালে এটিএম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডেন্টেফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্স একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) বা স্মার্টাকার্ড প্রকল্পটি হাতে নেয়। সে সময় ভোটার সংখ্যা নয় কোটি ছিল বলে তাদেরই স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রায় পাঁচ বছর ২০১৬ সালের অক্টোবরে ঢাকায় বিতরণ শুরু হয় এ নাগরিক পরিচিয়পত্র। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখনো চার কোটি কার্ড ছাপাতে পারেনি।
স্মার্টকার্ড প্রস্তুতকারী ফরাসী প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিস ব্যর্থ হওয়ার পর এ কার্ড ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারাই উৎপাদন করছেন। আগামীতে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে সব কাজ সম্পন্ন করে নেওয়ার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ভুল সংশোধন করে স্মার্টকার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়াটা লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তাই কার্ডগুলো আগে বিতরণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সংশোধনের সুযোগ থাকছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ