ইসির সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইতিমধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সার্ভারের কানেক্টিভিটি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলা নির্বাচন কার্যালয়গুলোর সঙ্গেও কানেক্টিভিটি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনআইডিতে মোট তিন ধরনের আবেদন আসে। ভুল সংশোধন, ঠিকানা পরিবর্তন এবং হারানো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া কার্ড উত্তোলন।
আঞ্চলিক পর্যায়ে কানেক্টিভিটি স্থাপনের ফলে হারানো কার্ড এখন একদিনেই উত্তোলন করা যাবে। এজন্য ঢাকায় আসার আর প্রয়োজন নেই। অন্য দুই ধরনের আবেদন স্থানীয় কর্মকর্তাদের ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত বরাবরের মতোই থাকবে। কেননা, সংশোধন কিংবা ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ক্ষেত্র বিশেষে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজনও পড়ে। হারানো কার্ড উত্তোলনের ক্ষেত্রে কেবল নিজের কার্ডের প্রমাণ দিলেই আঞ্চলিক কর্মকর্তা নতুন করে প্রিন্ট দিতে পারেন। আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে কানেক্টিভিটি এ সুবিধা দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের দশটি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে- এগুলো হলো ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, ফরিদপুর ও রাজশাহী।
এ অঞ্চলগুলোর কোনো জেলার কোনো নাগরিকের এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি লেমিনেটেড এনআইডি পাবেন। স্মার্টকার্ড পেতে হলে তাকে অপেক্ষা করতে হবে। কেননা, সেটি ঢাকা থেকে ছাপানোর পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঠানো হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, জেলা পর্যায়ে কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা হলে কোনো একটি থানার নাগরিককে নতুন কার্ড উত্তোলনের জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়েও যেতে হবে না। কিংবা আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে কার্ড প্রিন্ট হয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। এক্ষেত্রে এনআইডি সংশোধনের সুবিধা জেলাতেই দেওয়ার কথা ভাবছে ইসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সব ধরনের আবেদন আগে কেন্দ্র থেকেই সমাধান দেওয়া হতো। এতে এনআইডি অনুবিভাগের কাজের চাপ তিনগুণ বেড়ে গিয়েছিল। কেননা, এনআইডি অনুবিভাগের লোকবল ১শ জনেরও কম। এ পরিমাণ লোকবল দিয়ে হাজার হাজার সমস্যার সমাধান প্রতিদিন দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়। তাই নির্বাচন কমিশন স্থানীয় পর্যায়ে কিছুকিছু বিষয় বিকেন্দ্রীকরণ করে দিচ্ছে।
জেলা পর্যায়ে এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়ে সম্প্রতি ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালককে নির্দেশনাও দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে আইনি জটিলতা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনে কোনো বাধা না থাকলে জেলা পর্যায়ে সংশোধনের কার্যক্রমও হাতে নেওয়া হবে শিগগিরই।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এনআইডি সেবাকে বিকেন্দ্রকীকরণ করা এখন সময়ের দাবি। কেননা, সেই গ্রাম থেকে একজন লোক ঢাকা এসে এনআইডি উত্তোলন বা সংশোধন করতে অনেক সময় আর অর্থ ব্যয় করেন। এটা হয়তো সবার জন্য সম্ভবও না। তাই এনআইডি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই জেলা পর্যায়ে সেবা বিক্রেন্দ্রীকরণের কথা ভাবা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ