ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

পিইসি সভা, পরবর্তী একনেকে ইভিএম প্রকল্প

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
পিইসি সভা, পরবর্তী একনেকে ইভিএম প্রকল্প ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত ও আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করতে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনতে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

চলতি বছরের ১৬ আগস্ট ইভিএম প্রকল্পের এ প্রস্তাব পাঠায় ইসি। যা গত ১৯ আগস্ট শেরে বাংলানগরে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো এ প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়।

তবে মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হঠাৎ করেই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সদস্য (সচিব) মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমতিক্রমে আগামী মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, দেড় লাখ ইভিএম কেনা প্রকল্পটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বহির্ভূত। প্রকল্পটি পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ায় একনেকে উঠতে কোনো বাধা নেই। তবে এ প্রকল্পে কোনো ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি হয়নি। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি সময় থেকে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ইসি। এতে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে দেড় লাখ ইভিএমসহ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫১৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রতি ইউনিট ইভিএমের দাম পড়বে প্রায় দুই লাখ টাকা।

ইসির পাঠানো প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া বিষয়ে সামগ্রিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে কমিশনকে নির্বাচনী উপকরণ বিতরণ, ব্যালট, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া, ব্যালট পেপার ও বাক্স ছিনতাই সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। এরফলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাই স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন উপহার দিতে ইসি ইভিএম প্রচলনের উদ্যোগ নেয়।
 
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১১ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, টাঙ্গাইল ও নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়নি।

আগে ব্যবহৃত ইভিএমের ত্রুটিসমূহ বিবেচনায় রেখে সম্পূর্ণ নতুন কনফিগারেশনের অত্যাধুনিক ইভিএম ব্যবহারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইভিএম প্রস্তুতের জন্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে আইটি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) নতুন কনফিগারেশনের উন্নতমানের ইভিএম প্রস্তুত করে।
 
নতুন ইভিএম মেশিন গত বছর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়। ওই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিটি ইভিএমে ভোট গণনার সময় লাগে মাত্র এক মিনিট। কেন্দ্রের ভোট নিরপেক্ষ, সহজ এবং সময়বান্ধব করতে মেগা প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পরবর্তী একনেক সভায় ইভিএম কেনা প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। আমরা প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়ে রাখবো। পরে ধাপে ধাপে বছরওয়ারী অর্থ বরাদ্দ দিয়ে ইভিএম কিনবো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত আকারে’ ইভিএম ব্যবহার করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে। এটা ধীরে ধীরে ব্যবহার করে যখন অভ্যস্ত হয়ে যাবো, তখন পুরোদমে ব্যবহার করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার পর ঠিকাদার নিয়োগ, ক্রয় কমিটির অনুমোদন হবে। পরে আমদানি করে ব্যবহার করা হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এমআইএস/ইএআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।