এরমধ্য দিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আড়াইমাস পরে বরিশালে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব নেবেন।
এ উপলক্ষে বরিশালজুড়ে চলছে উৎসবের আমেজ।
মঙ্গলবার নতুন মেয়রকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বাংলানিউজকে জানান, নব নির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে বরণ করতে নানা আয়োজনের ব্যবস্থ্য করা হয়েছে। সাদিক আব্দুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বরিশালের উন্নয়ন যজ্ঞ দেখবে নগরবাসী।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর জানান, গত ৩০ জুলাই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু একদিন পরে শোকের মাস আগস্ট মাস শুরু হয়ে যাওয়ায় তিনি কোনো সংবর্ধনা এমনকি ফুলের শুভেচ্ছাও নেননি। আর তাই দায়িত্ব গ্রহণের দিনে জাকালো আয়োজনে তাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এর প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বরিশাল সিটি করপোরেশনের আয়োজনে মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নগর ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস।
বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে নগরসেবকের দায়িত্ব ভার গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন বিসিসির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন। তবে এর আগে নতুন মেয়র নগর ভবনে পৌঁছানোর পরপরই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করবেন। তার এ দায়িত্বগ্রহনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝিমিয়ে থাকা নগর ভবনও প্রাণ ফিরে পাবে বলে আশা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। তাদের মাঝেও চাঙ্গা মনোভাব বিরাজ করছে। কেননা বেতন বকেয়া থেকে শুরু করে কর্মচারীদেরও নানা সমস্যা রয়েছে, যেগুলো সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন নতুন এই মেয়র।
তবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রায় ৩শ কোটি টাকা দেনা মাথায় নিয়ে নগর ভবনের দায়িত্ব নিচ্ছেন। যে দেনা পরিশোধ করাটাই নতুন মেয়রের জন্য চ্যালেঞ্জের হবে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
তবে এরইমধ্যে নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, দেনা শোধ হওয়া না পর্যন্ত তিনি করপোরেশন থেকে সম্মানী ভাতা নেবেন না।
গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সারওয়ারকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সাদিক আবদুল্লাহ। যে নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হয় ভোটের প্রায় ২ মাস পর গত ৮ অক্টোবর।
এদিকে বিধি অনুযায়ী নগরভবনের বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে ২২ অক্টোবর। ২৩ অক্টোবর শূন্য হয়ে যাবে মেয়রের পদ। যদিও গত ৪ অক্টোবর মেয়াদপূর্তির প্রায় ১ মাস আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী বরাবর ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠান মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামাল।
এদিকে সোমবার (২২ অক্টোবর) সকালে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কাউন্সিলরকে শপথ পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মো. মোশাররফ হোসেন।
শপথগ্রহণ শেষে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে যান। সেখানে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের মাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সন্ধ্যায় জাতির জনকের মাজারে দোয়া মোনাজাত ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন নতুন মেয়র। এ সময় তার সঙ্গে নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা ছাড়াও আওয়ামী লীগের ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
এমএস/এএটি