তবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিশেষ করে পুরো পুরান ঢাকায় তার পোস্টার দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। ঢাকা-৭ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেতে এসব পোস্টার সাঁটিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মহানগরের বংশাল, কোতয়ালী, চকবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ ও ধানমন্ডি এলাকাতেও মিলনের পোস্টারের ছড়াছড়ি।
মিলনের পাশাপাশি ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকার প্রার্থী ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন হাজী সেলিম। আসনটিতে এবারও মনোনয়প্রত্যাশী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
আওয়ামী লীগের এ দুই প্রার্থীসহ সবাইকে পোস্টারের লড়াইয়ে পেছনে ফেলেছেন জাতীয় পার্টির মিলন। বছর খানেক আগে তার নামে মামলাও হয়েছিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিশেষ আদালতে। এরপরেও থামছেন না ‘পোস্টার মিলন’। ঈদ, নতুন বছরের শুভেচ্ছাসহ নানা বিষয়ে নগরীতে পোস্টার সাঁটানোয় মিলন বেশ পটু। মিলনের পোস্টার জঞ্জাল ঠেকাতে বিপাকে পড়েছে সিটি কর্পোরেশনও!
ইতোমধেই ঢাকায় সারাবছর নিজের ছবি দিয়ে বড় বড় পোস্টার লাগিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন।
সিটি কর্পোরেশন একাধিকবার পোস্টার লাগানোর বিষয়ে সতর্ক করলেও কেন পোস্টার লাগিয়েই যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, “সবাই পোস্টার লাগায় তাই আমিও লাগাই। কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া আমি পোস্টার লাগাই না। ’
তিনি বলেন, “প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পোস্টার লাগাচ্ছে। স্কুল-কলেজ, বড় বড় অ্যাড কোম্পানিও পোস্টার লাগাচ্ছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল পোস্টার লাগাচ্ছে, বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের পোস্টার সবচেয়ে বেশি!”
সিটি কর্পোরেশনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পোস্টার লাগানোর বিষয়ে মিলন বলেন, “আমি সারা বছর পোস্টার করি না। যেহেতু এ বছর জাতীয় পার্টির দুইবার মহাসমাবেশ হয়েছে তাই দুইবার পোস্টার লাগিয়েছি। সবাই যদি পোস্টার না লাগায় তাহলে আমিও লাগাবো না। ”
মিলনের পাশাপাশি উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নতুন নতুন উপলক্ষে পোস্টার সাঁটানোয় ব্যস্ত থাকেন হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচলাক আদম তমিজি হক। এবার নতুন দাবি তুলে তিনি পোস্টার সাঁটিয়েছেন। পোস্টারে লিখেছেন- ‘মানবিক ঢাকার দাবি, টুঙ্গীপাড়ায় প্রশাসনিক রাজধানী’। এ পোস্টার শুধু দেয়ালে নয়, নগরীর গণপরিবহনেও সাঁটিয়েছেন আদম তমিজি হক।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, অবৈধ পোস্টারিংয়ের কারণে আদম তমিজি হককে ২০১৭ সালের ০৫ ডিসেম্বর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে জরিমানা করে। অবৈধভাবে পোস্টারিং করে শহরকে নোংরা করার অপরাধে দেয়াল লিখন ও পোস্টার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দিয়েছেন আদম তমিজি হক। এরপরেও থামছে না তার পোস্টার আগ্রাসন!
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, এ দুই জন ব্যক্তি (হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন ও আদম তমিজি হক) পোস্টারিং করেই যাচ্ছেন। দুজনকে বারবার নোটিশও করা হয়েছে। এমনকি মামালা ও জরিমানাও করা হয়েছে। এরা শহরকে পোস্টারের জঞ্জাল বানাচ্ছেন। আমরা আবারও মাঠে নেমেছি। যদি এ দুই ব্যক্তি আইন অমান্য করেন তবে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ