বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বাংলানিউজকে বলেছেন, আমাদের তো অনেক দিন ধরে ৮৫ উপজেলা কর্মকর্তা নেই। বেশিদিন হয়তো এ সমস্যা থাকবে না।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ৩২৮ জন প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিয়োগ পায়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বধীন কমিশন পুনর্বাছাই পরীক্ষা নিলে অংশ নেয় ৩০৩ জন। এতে ৮৫ জন বাদ পড়েন। অবশিষ্ট ২১৮ জনের মধ্যে ১১ জন চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন ২০৭ জন। পরবর্তীতে ওই ৮৫ জন আদালতে মামলা করেন। ফলে সেসব পদে আর নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাদ পড়াদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া আইনি জটিলতা নিরসনে বা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশন কোনো উদ্যোগও আর নেয়নি। ফলে প্রায় ১১ বছর ধরেই কোনো কোনো উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দু’টি উপজেলার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তার সংকট ইসির কর্মযজ্ঞে দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম কারণ। এছাড়া ভুল-ত্রুটির সঙ্গে মানসিক চাপের মধ্যেও তাদের যেতে হচ্ছে।
বছর ধরে ‘রুটিন’ কাজ এভাবে সম্পন্ন করা গেলেও নির্বাচনের সময় বিপাকে পড়তে হয় বলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান। তাদের মতে, বছরের অন্যান্য সময় এক কর্মকর্তাকে দিয়ে দু’টি উপজেলার কাজ করানো হয়। কিন্তু সংসদ নির্বাচনে তো আর সেটা সম্ভব নয়। তাই সরকারের অন্য মন্ত্রণালয় থেকে লোকবল নিতে হয়। যারা অল্প সময়ে এসে নির্বাচনের কার্যক্রম বুঝে ওঠেন না।
নির্বাচন কমিশন প্রার্থী ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, ফলাফল ব্যবস্থাপনা সিস্টেম দিয়ে নির্বাচনের সব কাজ করে থাকে। আর এ কাজটি অন্য দফতর থেকে আসা লোকজন দ্রুত রপ্ত করতে পারেন না। আর করলেও অভিজ্ঞতা না থাকায় তাদের বেশ বেগ পেতে হয়। এতে সবকিছুতেই বিলম্বের ছাপ পড়ে। ভুল বেশি হয়।
এছাড়া ম্যানুয়ালি মনোনয়নপত্র বাছাই, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটারের সমর্থন যাচাই ইত্যাদি কাজগুলোও অন্য দফতর থেকে আসা লোকবল দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হয় না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চলছে একই অবস্থা। ওই ৮৫টি উপজেলা কর্মকর্তার পদে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেকে দায়িত্ব গ্রহণও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনও এভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তাই বিষয়টির দ্রুত সমাধান চান ভূক্তভোগিরা।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তার ঘাটতি রয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তবে নন ক্যাডার থেকে আমরা অনেককেই নিয়োগ দিচ্ছি। আর সরকারের অন্য মন্ত্রণালয় থেকে লোকবল আনায় তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কেননা, তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ