আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীর হলফনামায় বড় দুই দলের প্রধানরা এমনটাই উল্লেখ করেছেন।
শেখ হাসিনার কোনো দেনা ঋণ না থাকলেও খালেদা জিয়া বাড়ি ভাড়া বাবদ ঋণ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৫৮ লাখ।
হলফনামা অনুযায়ী, শেখ হাসিনা, স্বামী: এম এ ওয়াজেদ, মাতা: বেগম ফজিলাতুন্নেছা, ঠিকানা: বাস#৫৪, রাস্তা#৫, ধানমন্ডি আ/এ, নিউমার্কেট, ঢাকা।
তার নির্বাচনী এলাকা রংপুর-৬ ও গোপালগঞ্জ-৩। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্য বিএ পাস। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। অতীতে ১৬টি মামলা করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা নিজের আয় উল্লেখ করেছেন, কৃষিখাত থেকে ৩ লাখ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৫ টাকা। ব্যবসা (রয়্যালিটি বাবদ) থেকে আয় ১৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় ১২ লাখ টাকা। পেশা থেকে আয় উল্লেখ নেই।
চাকরি (সম্মানী ভাতা) থেকে আয় ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকার, অন্যান্য খাত থেকে আয় দেখানো হয়েছে ২৭ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬০ টাকা।
বছরে আয় ৭৭ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৪ হাজার টাকা। তিনি মাসে গড়ে আয় করেন মোট ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৭৮২ টাকা ৮৩ পয়সা।
নির্ভরশীলদের আয়ের তথ্যের ঘরে শেখ হাসিনা লিখেছেন ‘প্রযোজ্য নয়’।
সম্পদের বর্ণনায় বলা হয়েছে, নগদ টাকার পরিমাণ ৮৪ হাজার ৫৭৫ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ ৭ কোটি ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৩০৩ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৫ লাখ টাকা।
৬ লাখ টাকার যানবাহন (দানে প্রাপ্ত) থাকার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। অলংকার রয়েছে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার। এছাড়া ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার।
এছাড়া ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার (অর্জিত সময়ের মূল্য) ৬ একর কৃষি জমি আছে, অকৃষি জমি রয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। কোনো দায়-দেনা-ঋণ নেই।
শেখ হাসিনা ১২টি মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন। একটি খারিজ হয়েছে। দু’টি মামলার বিবরণীতে লেখা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে তা ঢাকার সিএমএম আদালত গ্রহণ করে। অন্যটির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এজাহারে নাম ছিলো না। চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলে আদালতের নির্দেশে পুনরায় তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার হলফনামায় লিখেছেন, স্বামী: ‘শহীদ’ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম, মাতা: তৈয়বা মজুমদার। ঠিকানা: বাড়ি#০১, রোড#৭৯, গুলশান-২ (বর্তমানে কেন্দ্রীয় কারাগার, নাজিমুদ্দিন রোড ঢাকা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে তিনি লিখেছেন, স্বশিক্ষিত। আর মামলার বিবরণীতে লেখা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৭টি বিচারাধীন, চারটি মামলা পেন্ডিং। আর অন্যগুলো স্থগিত রয়েছে।
পেশার বিবরণীতে খালেদা জিয়া লিখেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল-বিএনপির সাংগঠনিক কার্যাবলী পরিচালনা করেন।
এদিকে খালেদা জিয়া বছরে বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় করেন ৬৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ব্যাংকে আমানত থেকে আয় ৮৫ লাখ ৯ হাজার ৮১৩ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদেরও আয় ‘প্রযোজ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বছরে খালেদা জিয়ার মোট আয় ১ কোটি ৫২ লাখ ৪১ হাজার ১২৭ টাকা। মাসে তার গড় আয় ১২ লাখ ৭০ হাজার ৯৩ টাকা ৯২ পয়সা। নগদ হাতে আছে ৫০ হাজার ৩০০ টাকা।
যানবাহন হিসেবে ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার দু’টি টয়োটা জিপ রয়েছে। স্বর্ণ রয়েছে ৫০ তোলা (জহুরতসহ)। এছাড়া ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ১২ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের ৮ শতাংশ অকৃষি জমি। অর্জনকালীন ১০০ টাকা মূল্যে গুলশানে একটি বাড়ি আছে। আর ৫ টাকা মূল্যের ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি দখলে নেই।
বাড়ি ভাড়া বাবদ তার ঋণ আছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ব্যাংকে তার কোনো ঋণ নেই।
খালেদা জিয়ার ফেনী-১ ও বগুড়া-৬ ও ৭ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচন হবে। ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
ইইউডি/এমএ