ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

শিক্ষায় ড. মোমেন, অর্থবিত্ত-মামলায় শীর্ষে সামাদ

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৮
শিক্ষায় ড. মোমেন, অর্থবিত্ত-মামলায় শীর্ষে সামাদ ড. একে আবদুল মোমেন ও মাহমুদ উস সামাদ, ফাইল ফটো

সিলেট: সিলেটের ছয়টি আসনে ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থিতায় রয়েছেন আট ভিআইপি। ইতোমধ্যেই তারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাতে সংযুক্ত হলফনামায় দাখিল করেছেন নিজেদের সম্পদ বিবরণীসহ বৃত্তান্তও।

এই আট প্রার্থীর মধ্যে সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও সাবেক আমলারা রয়েছেন। তবে শিক্ষায় সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ড. একে আবদুল মোমেন।

আর অর্থবিত্ত এবং মামলা সংখ্যা নিয়ে শীর্ষে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, পেশায় শিক্ষক একে আবদুল মোমেন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। এছাড়া তার বার্ষিক আয় ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা।

অস্থাবর সম্পদ নিজের নামে দেখিয়েছেন ৮০ লাখ ৫৬ হাজার ৫২১ টাকা, স্ত্রীর নামে ১৩ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদ নিজের নামে ৪ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এছাড়া ব্যাংক দেনা নেই তার।

এদিকে, সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী শিক্ষায় এলএলবি। তার বার্ষিক আয় ৩০ লাখ ৬ হাজার ৪৮০ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ নিজের নামে ১১ লাখ টাকাসহ ৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৩১৯ টাকা দেখিয়েছেন। এছাড়াও রয়েছে ১৪ হাজার ৯২০ ইউএস ডলার বৈদেশিক মুদ্রা। স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন এক কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ টাকার।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর নামে ঢাকার বনানীতে ৮টি, মোহাম্মদপুরে ১৫টি ও আরকে মিশন রোডে একটি বাড়ি/এপার্টমেন্ট রয়েছে। যেগুলোর মূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯লাখ ৮১ হাজার টাকা। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। ব্যাংক দেনাও নেই।

সিলেট-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মো. ইয়াহইয়া চৌধুরীর পেশা দেশ ফিশারিজ অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। শিক্ষায় ডিপ্লোমা ইন ল’। বার্ষিক আয় ১২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৪ টাকার। স্থাবর সম্পদ নেই ইয়াহহিয়ার। হলফনামায় স্ত্রী ও পরিবার সদস্যদেরও ভূমিহীন দেখিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। ব্যাংক দেনাও নেই।

সিলেট-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর বার্ষিক নিজের আয় ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। তার সম্পদ রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার।

এর বাইরেও রয়েছে তার স্ত্রী-পুত্রের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। পাশাপাশি ব্যাংক ঋণেও সবার চেয়ে এগিয়ে তিনি। চারটি ব্যাংকে তার দেনার পরিমাণ ৭ কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ৮৪ টাকা। ভিআইপি আট প্রার্থীদের মধ্যে তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি চারটি মানহানির মামলাসহ আটটি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটিতে খারিজ, একটিতে অব্যাহতি ও দু’টি বিচারাধীন রয়েছে হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।

মাহমুদ উস সামাদ শিক্ষায় এমবিএ,এফসিএমআই (ইউকে)। কুশিয়ারা কম্পোজিট নীট ইন্ড্রাস্ট্রিজসহ পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও মালিক তিনি।

সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ শিক্ষায় বিএ (অনার্স)। পেশায় চা ব্যবসা ও পরামর্শক এই প্রার্থীর বার্ষিক আয় ২৯ লাখ ৫১ হাজার ৬২৩ টাকা। অস্থাবর সম্পদ নিজের নামে এক কোটি ৮০ লাখ ৬২০ টাকা। স্ত্রীর নামে দেখিয়েছেন এক কোটি ৭২ লাখ ২০ হাজার ৮৬০ টাকা।

ইমরান আহমদের স্থাবব সম্পদের পরিমাণ পৈতৃক কৃষি জমি ২৪ দশমিক ২৭ একর। নিজের অকৃষি জমি ৪ দশমিক ৫০ একরের মূল্য ৫৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে দেড় লাখ টাকা মূল্যের পাঁচ কাটা অকৃষি জমি ও ২৫ শতক ভূমিতে বহুতল ভবনের মূল্য দেখিয়েছেন এক কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৪ টাকা। পৈতৃক সূত্রে চা বাগানের মালিক এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা নেই, দায়-দেনাও নেই।

সিলেট-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিরোধী দলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন শিক্ষায় বিএসসি (অনার্স)। পেশায় দুই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। তার বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ২৯ হাজার ৯০৪ টাকা।

একটি পিস্তলসহ তিনি অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৬০ লাখ ৫৯ হাজার ১৯ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৭৫ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা মূল্যের ৫ দশমিক ০৩ একর কৃষি জমি, ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ১৪৫০ শতক অকৃষি জমি ও ৮৩ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের বাড়ি, এপার্টমেন্ট ও বাণিজ্যিক ভবন। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই।

সিলেট-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষায় বিএ। পেশায় শিক্ষামন্ত্রী (রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। ) শিক্ষামন্ত্রী বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২০৫ টাকা। এর মধ্যে পেশা থেকে আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বাকিটুকু কৃষি ও ব্যাংক আমানত থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার ২০৫ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ৩৫ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৫টাকা, স্ত্রীর নামে ১ লাখ টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা নিজ নামে ৩৯ লাখ ৭২হাজার ৯৮৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩০টাকা। শেয়ার/সঞ্চয়পত্রে নিজের বিনিয়োগ ২০ লাখ, স্ত্রীর নামে ৫০ লাখ টাকা। যানবাহন রয়েছে ৫৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩২১ টাকা  মূল্যের। স্বর্ণালঙ্কার নিজের ৭৫ হাজার ও স্ত্রীর পরিমাণ মূল্য জানা নেই উল্লেখ রয়েছে। ইলেকট্রনিক সামগ্রী নিজের ২ লাখ ২৫ হাজার ও স্ত্রীর ১ লাখ টাকা। আসবাবপত্র নিজের ৪৫ হাজার ও স্ত্রীর ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৩১ শতক কৃষি জমি ও ২ লাখ টাকার ৫৬ শতক ও ৪০ লাখ টাকা মূল্যের এপার্টমেন্ট। নিজ নামে ৫ কাটা জমির ওপর এপার্টমেন্টের মূল্য দেখিয়েছেন ২১ লাখ ৮ হাজার ৪৪০ টাকা। তার মামলা ও দায়-দেনা নেই।

এ আসনের বিকল্পধারার প্রার্থী সাবেক আমলা শমসের এম চৌধুরী শিক্ষায় বিএ (অনার্স)। পেশায় চাকরীজীবী ছিলেন এই প্রার্থী। বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে তিন মামলার আসামি তিনি। এর মধ্যে দু’টি বিচারাধীন। তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৬২ লাখ ৫৩ হাজার ২১৫ টাকা।

নগদ ১ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭২ টাকাসহ অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭২ টাকার। স্ত্রীর নামে স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখিয়েছেন সাড়ে ৪ লাখ টাকার। ভূমিহীন শমসের মবিনের দায়-দেনাও নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৮
এনইউ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।